Friday, July 10, 2015

খানাখন্দকে ভরা মহাসড়ক : দুর্ঘটনার আশঙ্কা

সিরাজগঞ্জের মহাসড়কের ৮৫ কিলোমিটার
অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে বিটুমিন-পাথর ওঠে
ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত এবং খানা- খন্দক
সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনাও বাড়ছে। তবে ঈদের আগে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ বিটুমিন, পাথর আর বালু-খোয়া দিয়ে জোড়াতালির মাধ্যমে যানবাহন চলাচলে উপযোগী রাখার চেষ্টা করছে। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের পর সেতুর পশ্চিমপাড়-হাটিকুমরুল, হাটিকুমরুল-পাবনা, হাটিকুমরুল-নাটোর-বনপাড়া ও হাটিকুমরুল-বগুড়া চারটি মহাসড়কে দিন
দিন যানবাহনের চাপ বাড়ে । গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০
হাজার যানবাহন এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে থাকে ।
বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে গোল চত্বর
থেকে নলকা সেতু পর্যন্ত ১৬ কিঃমিঃ বাংলাদেশ
সেতু বিভাগ (বিবিএ)’র এবং নলকা থেকে ৮৫ কিঃমিঃ
সিরাজগঞ্জ সওজ বিভাগের।
ঢাকা-রাজশাহী ও বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের ৮৫ কিঃমিঃ
অংশ সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের।
সারা বছরই মহাসড়কের এ অংশে নানা ধরনের
মেরামত ও সংস্কার চলে। কখনও টেন্ডারের
মাধ্যমে ঠিকাদার দিয়ে, কখনও নিজস্ব জনবল, পাথর ও
বিটুমিন দিয়ে সংস্কার কাজ চলে। তারপরেও গর্ত বা
খানাখন্দে ভরা মহাসড়কের এসব এলাকা। অভিযোগ
রয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিটুমিনের প্রলেপ
এতোটাই কম দিয়ে কার্পেটিং করা হয় যে
যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে সহজেই তা উঠে যায়।
এছাড়া সময়-অসময়ের বৃষ্টিতেও এসব প্রলেপ
সহজেই ধুয়ে যায়। যানবাহনের ঘর্ষণে তা আরও
নড়বড়ে হয়ে ওঠে।
সবচেয়ে বেহাল অবস্থা হাটিকুমরুল মোড়ে।
সওজের সংস্কার বা মেরামত এখানে কোনও
কাজেই আসছে না। হাটিকুমরুল মোড়ের
নির্মাণাধীন স্মৃতিস্তম্ভের পূর্বদিকে মহাসড়কের
দু’লেনেই প্রচুর খানাখন্দ। সেইসঙ্গে খানাগর্ত
তো আছেই। খানাখন্দের কারণে যানবাহনের
ধীর গতি ও দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। আর হাইওয়ে
ট্রাফিক ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের সেগুলো সামলাতে
পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। হাটিকুমরুল মোড় থেকে
বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের বোয়ালিয়া হয়ে উল্লাপাড়ার
শ্রীকোলা মোড় পর্যন্ত শত শত পটলস এবং
খানাখন্দ উঁকি দিচ্ছে। বৃষ্টির কারণে সেগুলোর
আয়তন ও পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে। এ মহাসড়কেও
বছর বছর সওজের মেরামত সংস্কার চলে
তারপরেও রয়েছে বেহাল দশা।
সিরাজগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল
কালাম আজাদ জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে
সব গর্ত ও খানা-খন্দ মেরামত করা হবে। এ ব্যাপারে
সিরাজগঞ্জ সওজ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
আশরাফুল ইসলাম পিকে জানান, জেলার হাটিকুমরুল
মোড় থেকে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কের বোয়ালিয়া
হয়ে উল্লাপাড়ার শ্রীকোলা মোড় পর্যন্ত প্রায়
১১ কিঃমিঃ মহাসড়কে আগে থেকেই খানাখন্দ ও
পটলস রয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে
সেগুলোর বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি
শেষ হলে নিজস্ব জনবল, বিটুমিন ও পাথর দিয়ে
এগুলো মেরামত করা হবে।
সারাবছরই এসব সড়কে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের
নামে কাজ চলতে দেখা গেলেও এতো খানা খন্দ
ও পটলস হয় কি করে? প্রশ্নের জবাবে
প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম পিকে বলেন, ভারি
যানবাহন ও ওভার লোডেড ট্রাকের কারণে সওজ
নির্মিত মহাসড়কের বিটুমিন উঠে গিয়ে খানাখন্দের
সৃষ্টি হয় বলে দাবি করেন তিনি। একই মহাসড়কের
চান্দাইকোনা থেকে হাটিকুমরুল মোড় এবং বগুড়া-
নগরবাড়ি মহাসড়কের উল্লাপাড়া থেকে বাঘাবাড়ি
পর্যন্ত প্রায় ৪৪ কিঃমিঃ অংশে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে
মহাসড়কের সংস্কার কাজ করা হলেও হাটিকুমরুল
থেকে শ্রীকোলা পর্যন্ত ১১ কিঃমিঃ পথ বাকি
আছে। ওই বাকি অংশ সংস্কারের জন্য প্রায় চার
কোটি টাকার এস্টিমেট করা হয়েছে। আগামী
অর্থ বছরে এই মেরামত কাজ হতে পারে।
ঈদের আগে এই মহাসড়ক ঠিক করা হবে কিনা
জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সওজ-এর নির্বাহী
প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঈদের
আগে সিরাজগঞ্জ জেলার ৮৫ কিঃমিঃ মহাসড়ক
জোড়াতালি দিয়ে চালানো হবে। আশাকরি কোনও
সমস্যা হবে না। সমস্যা যদি হয় তাহলে ট্রাফিক বিভাগ বা
যানবাহনের হুড়োহুড়ির কারণে হতে পারে।
এদিকে, নিরাপদে ও নির্বিঘেœ ঈদে ঘরমুখো
মানুষের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসক
কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বঙ্গবন্ধু
সেতুর পশ্চিম পাড়ে গোলচত্বর থেকে
হাটিকুমরুল মোড় হয়ে চান্দাইকোনা পর্যন্ত
সার্বক্ষনিক ভিজিল্যান্স টিম বা বিশেষ নিরাপত্তা টহল এবং
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বেপরোয়া
লক্কর-ঝক্কর ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের
বিপরীতে মোবাইল কোট পরিচালনার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়।

0 comments:

Post a Comment