মাত্র চারদিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস
ট্রেন সিরাজগঞ্জ-ঈশ্বরদী রেলপথে তিনবার
লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনার পর পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে। তারা রেল লাইন সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।
তবে সেই পুরনো নিয়মেই জোড়াতালি দিয়ে
লাইন মেরামত ও সংস্কার করছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের বাজার স্টেশন থেকে
রায়পুর হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে শহীদ
এম.মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১০কিমি
লুপ-লাইনের সংস্কার কাজ পুরাতন স্লিপার দিয়ে করা হচ্ছে।
ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় পর সিরাজগঞ্জ রেল
বিভাগের স্থায়ীপথ পরিদর্শক ঊর্ধ্বতন উপ-
সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন ও লাইনম্যান গোলাম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আর পাকশী রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন
দু’কর্মকর্তার শাস্তিমূলক বদলি হওয়ায় বাকিরা শাস্তি আতঙ্কে রয়েছেন।
লাইনচ্যুতির ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভগের গঠিত দু’টি পৃথক তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশ ক’জন
কর্মকর্তা, কর্মচারী ও লাইনম্যানের দায়িত্বে
অবহেলার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আর এ
কারণে নতুন করে অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে- এ আশঙ্কায়
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
সার্বক্ষণিক সিরাজগঞ্জ এসে মাঠ পর্যায়ে সংস্কার
ও মেরামত কাজ পরিদর্শণ করছেন। দেরিতে
হলেও তারা এখন অতিমাত্রায় আগ্রহী হয়ে
সিরাজগঞ্জে রয়েছেন। দম ফেলার সময় নেই
কর্মকর্তাদের। সে সঙ্গে শ্রমিক ও কর্মচারীদের।
সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার বিষয়টি
এখন যেন সিরাজগঞ্জবাসীর জন্য আর্শীবাদ
হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার এ ১০ কিমি
লুপ-লাইনের সংস্কার ও মেরামত কাজ দীর্ঘদিন
থেকে শুরু না হলেও দুর্ঘটনার কারণে বর্তমানে
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেদের
চাকরি বাঁচাতে কাজ করতে হুমড়ি খেয়ে
পড়েছে। রাজশাহী বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী
মাহবুবুল আলম বকশী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আহম্মেদ মাসুম, পাকশী রেল বিভাগের ডিভিশনাল রেল ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন, ডিভিশনাল প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজীসহ প্রায় ডজন খানেক পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের কর্মকর্তা ঘন ঘন সিরাজগঞ্জ আসছেন। শতাধিক কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক সংস্কার কাজে এরই মধ্যে অংশ নিয়েছেন।
পাকশী রেল বিভাগের ডিভিশনাল রেল ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন সোমবার সিরাজগঞ্জের রায়পুর থেকে বাজার স্টেশন পর্যন্ত সংস্কার কাজ দেখতে এসে বলেন, এখন দ্রুত লাইন সংস্কারকরাটাই মূল কাজ। তদন্তে প্রসঙ্গে বলেন তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রেল বিভাগের এ অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাপক গাফলাতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর মাঠ পর্যায়ে থাকা অতিরিক্ত
প্রধান প্রকৌশলী আহম্মেদ মাসুম বলেন, বৃষ্টি
প্রধান অন্তরায় হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও
কর্মচারীদের গাফলাতি ছিল। সবাইকেই শাস্তি
পেতে হবে। কিন্তু মেরামত ও সংস্কার কাজের
স্বার্থে আপাতত গাফলাতি করা কর্মকর্তা ও
কর্মচারীদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। কাজ
শেষে নামও প্রকাশ করা হবে, পাশাপাশি শাস্তিও
দেওয়া হবে।
0 comments:
Post a Comment