বাংলাদেশের স্বাধীনতার
বিরোধিতা করে মুক্তিযুদ্ধের সময়
যারা পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গী
হয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটে অংশ
নিয়েছিল, তাদের ভূমিকা
পাঠ্যপুস্তকে তুলে ধরার দাবি
জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের চলমান
বিচারে একের পর এক রায় ঘোষণার
মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস
সম্পর্কে নবীন প্রজন্মকে সচেতন
করে তোলার লক্ষ্যে রোববার সংসদে
এই দাবি জানান তিনি।
বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনার জন্য
দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ
এনে মোজাম্মেল হক বলেন,
“পাঠ্যপুস্তকে মুক্তি সংগ্রামের
ভূমিকা যুক্ত হয়েছে। এই জন্য আমি
শিক্ষামন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
তবে এটাই যথেষ্ট নয়।
“মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী
রাজাকার, আল বদর ও জামায়াতে
ইসলামীর ভূমিকা পাঠ্যপুস্তকে
যুক্ত করতে হবে। কেবল
মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকার কথা
বললেই পূর্ণ সত্য বলা হয় না, এতে
অর্ধসত্য বলা হয়। আমাদেরকে পূর্ণ
সত্যের কথা বলতে হবে।”
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে
দণ্ডিতদের মধ্যে অধিকাংশই
জামায়াতে ইসলামীর নেতা। এদের
মধ্যে আল বদর বাহিনীর নেতা,
রাজাকার বাহিনীর নেতাও রয়েছেন।
রাজাকার, আল-বদরসহ
স্বাধীনতাবিরোধীদের একটি
তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার
কথাও জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক
মন্ত্রী।
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে রাজাকার, আল বদরদের
একটি তালিকা ছিল। কিন্তু
বিএনপি-জামায়াতের আমলে
মুজাহিদরা মন্ত্রী হয়ে এটা ধ্বংস
করে দিয়েছে।”
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা
চূড়ান্ত করার বিষয়ে মোজাম্মেল
হক বলেন, “এটা নিয়ে একটি মামলা
হয়েছে। আশা করি, আগামী তারিখেই
এটা শেষ হয়ে যাবে। মামলার বাধা দূর
হলে আমরা তালিকাটি চূড়ান্ত করে
ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব।”
এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের সনদের
সঙ্গে পরিচয়পত্রও দেওয়া হবে বলে
জানান তিনি।
সম্মুখযুদ্ধের স্থান, বধ্যভূমি,
মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষণের
পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা
যুদ্ধে আত্মদানকারী মিত্র
বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে
স্মৃতিস্তম্ভ করার সিদ্ধান্ত
নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা
দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়ে তিনি
বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অনেক
মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু
একদিনে এত মানুষ আর কখনও নিহত
হয়নি। এদিন প্রায় ৫ লাখ মানুষকে
খুন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে যেসব শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে এখনও জাতীয় সংগীত
গাওয়া এবং জাতীয় পতাকা উঠানো হয়
না, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও সবার প্রতি
আহ্বান জানান মন্ত্রী।
0 comments:
Post a Comment