যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
এতে জেলার ২৩টি ইউনিয়নের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি।
এদিকে, সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপরের দিকে যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
অপরদিকে, প্লাবিত হওয়া এলাকা থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া মানুষেরা বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী, শুভগাছা, নিশ্চিন্তপুর, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, খাসরাজবাড়ি, কাজিপুর সদর, মনসুর নগর এবং চরগিরিশি, সিরাজগঞ্জ সদরের ছোনগাছা, খোকশাবাড়ী, মেছড়া, রতনকান্দি, সয়দাবাদ ও কাওয়াকোলা এবং কালিয়া হরিপুর, বেলকুচির সদর, বড়ধুল এবং রাজাপুর, চৌহালীর ঘোরজান, স্থল, খাস পুকুরিয়া, বাগুটিয়া এবং ওমরপুর, শাহজাদপুরের জালালপুর, রুপবাটি, কৈজুরী, সোনাতনী ও ডালা ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি দিন কাটাচ্ছেন।
কাজিপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব, মাইজবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার জাহাঙ্গীর আলম ও নিশ্চিন্তপুরের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক স্বপন বাংলানিউজকে জানান, আকস্মিক বন্যায় চরাঞ্চলের মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ঢেকুরিয়া হাট পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরেও পানি ঢুকে পড়েছে।
তারা জানান, ঢেকুরিয়া উপজেলার ৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাফিউল ইসলাম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বন্যার্তদের জন্য ১৫ মেট্রিকটন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. ওমর আলী শেখ জানান, বন্যায় জেলার ২ হাজার ৫৩৬ হেক্টর আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে রোপা আমন, বোনা আমন, শাক, মৌসুমী শাক-সবজি, মাসকলাই ও কলাসহ বিভিন্ন ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, সোমবার দুপুরের দিকে শহরের হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আরও দু’একদিন পানি বাড়তে পারে।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন জানান, জেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য ৩ লাখ টাকা ও ১০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৪টি উপজেলায় ৩৫ মেট্রিকটন চাল এবং ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment