সিরাজগঞ্জের সেরা সদর উপজেলার বিনয়পুর খোলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে স্কুলটির শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে গাদাগাদি করে।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি
মো. সোলায়মান হোসেন বলেন,
বিদ্যালয়ের একটি পাকা ও দুটি আধা পাকা ভবন রয়েছে। এর মধ্যে একটি আধা পাকা ভবন পরিত্যক্ত। শ্রেণিকক্ষের অভাবে দুই পালায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো হয়।
তারপরেও স্থানসংকুলান না হওয়ায় পাশের ভাঙাচোরা একটি টিনের ঘরেও পাঠদান চলে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার চিঠি দিয়ে জানালেও কোনো কাজ হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পশ্চিম
পাশের ভাঙাচোরা টিনের ঘরের মেঝের
ওপর চটে বসে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির
শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বাকি
দুটি ভবনে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির
শিক্ষার্থীরা ঠাসাঠাসি করে বসে ক্লাস
করছে। ভেতরে জায়গা না হওয়ায় অনেকেই বারান্দায় বসে ক্লাস করছে। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি ছোট। নেই সীমানাপ্রাচীরও।
পশ্চিম ও উত্তর পাশ দিয়ে দুটি সড়কে
যানবাহন চলছে। পাশেই কয়েকটি দোকান ও বাজার। সেখানে কোলাহল লেগে রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রুমানা খাতুন, আঞ্জুয়ারা খাতুন ও মর্জিনা খাতুন বলে, ‘বড়দেরই জায়গা হয় না। আমরা তো এখনো ছোট। তাই মেঝেতেই প্রতিদিন ক্লাস করতে হচ্ছে। দেয়াল না থাকায় পাশের দোকানগুলোর লোকজনের কথাবার্তার শব্দে অনেক সময় লেখাপড়ার সমস্যা হয়।
কিন্তু উপায় নাই। এর মধ্যেই আমাদের
লেখাপড়া করতে হয়।’
বারান্দায় বসে ক্লাস করা চতুর্থ শ্রেণির
ছাত্র আমিনুল ইসলাম বলে, ‘যেদিন আগে
আসি সেদিন ভেতরে বসতে পারি। তা না
হলে বাইরে বসতে হয়। অনেক সময় বোর্ডে স্যারের লেখা চোখে পড়ে না।
শ্রেণিকক্ষগুলো বড় হলে সবাই ভালোভাবে বসতে পারতাম।’
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৯৮। সরকারি হওয়ার পর
১৯৮০ সালে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি টিনশেড পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। পরে এলজিইডির অর্থায়নে ১৯৯৬ সালে দুই কক্ষবিশিষ্ট আরেকটি টিনশেড পাকা ভবন নির্মাণ করা
হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তিন কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। তবে এতেও শ্রেণিকক্ষ সংকট কাটছে না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের আন্তরিক পাঠদানে ভালো ফল হচ্ছে। তবে বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হলে শিক্ষক- শিক্ষার্থী সবাই আরও উৎসাহিত হতো।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা আবদুস সালেক জানান, বিদ্যালয়টি
উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায়
প্রতিবছর পুরস্কৃত হয়। এ ছাড়া শতভাগ
উপস্থিতির জন্য ২০০৭ সালে এটি প্রাথমিক
শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পুরস্কার পেয়েছে।
বিদ্যালয়ের একটি নতুন ভবনসহ সর্বশেষ
নির্মাণ করা ভবনের ওপর দোতলা আরেকটি
ফ্ল্যাট করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো
হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment