সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন

সিরাজগঞ্জের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা অনলাইন নিউজ সাইট

বঙ্গবন্ধু বহুমুখি সেতু

যমুনা সেতু তথা যমুনা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ইহা যমুনা নাদীর পূর্ব তীরের ভূয়াপুর এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে। এইটি বিশ্বে ১১তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু।

ইলিয়ট ব্রিজ

ইলিয়ট ব্রিজ সিরাজগঞ্জ শহরের কাটা খালের উপরে লোহা ও সিমেন্টের সমন্বয়ে তৈরী। সিরাজগঞ্জ শহরকে দেখার জন্য কাঁটাখালের উপরে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু করে ইংরেজ এসডিও মিঃ বিটসন বেল আই, সি, এস, সাহেব ১৮৯৫ সনে ৪৫,০০০ টাকা খরচ করে বাংলার তৎকালিন ছোট লাট স্যার আল ফ্রেড ইলিয়ট সাহেবের নামানুসারে এই ব্রিজ তৈরী করেছিলেন। নামানুসারে এই ব্রিজ তৈরী করেছিলেন।

Monday, August 31, 2015

সলঙ্গায় বিষপান করিয়ে মা ও ২ মেয়েকে হত্যা,আটক ৪

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে এক গৃহবধূ ও তার দুই শিশু মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে ওই গৃহবধূর দুই ভাসুরসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় সলঙ্গায় পাঁচলিয়া গ্রামে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে আমেনা খাতুন (২৭) এবং তার দুই মেয়ে ফাতেমা (৬) ও নুপুরের (৩) মৃত্যু হয় বলে সদর থানার এসআই আনিছুর রহমান জানান।
আমেনা ওই গ্রামের মৃত রানার স্ত্রী।
এসআই আনিছুর রহমান বলেন, দুইমাস আগে খাবারে বিষক্রিয়ায় রানার মৃত্যুর পর থেকে আমেনা তার দুই মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন।
“শনিবার দুই সন্তানসহ আমেনা শ্বশুর বাড়িতে আসেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুই মেয়ে বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পরই তাদের মায়েরও একই অবস্থা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের মৃত্যু হয়।”
খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে আমেনার শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাবি করলেও আমেনার বাবা ও এক ফুফু অভিযোগ করেছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে।
আমেনার ফুফু চম্পা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, “আমেনার স্বামী রানার সঙ্গে সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বড় দুই ভাই সোলায়মান ও মানিকের দ্বন্দ্ব ছিল। যে কারণে দুই মাস আগে বিষ খাইয়ে রানাকে হত্যা করা হয়েছিল। ঠিক একই কায়দায় তাদের হত্যা করা হয়েছে।”
এ অভিযোগের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমেনার ভাশুর শহীদুল (৪৪) ও মানিক (৩২) এবং শহীদুলের স্ত্রী সেলিনা ও তাদের বোন লিপিকে আটক করা হয় বলে এসআই আনিছুর জানান।

Sunday, August 30, 2015

সিরাজগঞ্জে আ.লীগের দু’গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে জনবল নিয়োগের দরপত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
রোববার (৩০ আগস্ট) সকালে কলেজ সংলগ্ন সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দর-যাচাইয়ের সময় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পরে আওয়ামী লীগের ‍দুই ঠিকাদার গ্রুপের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্র দাখিল করা হয়।
সূত্র জানায়, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য গত ১২ আগস্ট দরপত্র আহ্বান করা হয়। রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দরপত্র দাখিলের শেষ সময় ছিল।
এদিকে, রোববার সকাল থেকেই মেডিকেল কলেজের অফিসে অবস্থায় নিয়ে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের একটি গ্রুপ।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের অপর একটি ঠিকাদার গ্রুপ দরপত্র জমা দিতে আসলে তাদের বাধা দেয় আগে অবস্থান নেওয়া নেতাকর্মীরা।
এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। একপর্যায়ে ঠিকাদাররা সমঝোতার মাধ্যমে দরপত্র জমা দেন।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, টেন্ডার নিয়ে দুই পক্ষের হাতাহাতির হলেও পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে পুলিশে সোপর্দ

হয়রানি এড়াতে সিরাজগঞ্জে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেওয়া হত্যা মামলার আসামি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হক বকুলকে (৪৫) গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী।
রোববার (৩০ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামানের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেফতারকৃত তোজাম্মেল হক সদর উপজেলার উত্তর সারটিয়া গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে।
আসামি হস্তান্তরের সময় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজামাল আকন্দ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক জামাল উদ্দিন তালুকদার, থানা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেন শেখসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় উত্তর সারটিয়া আমেনা মনসুর স্কুল মাঠে খেলা চলার সময় আসামি তোজামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরই তার আত্মীয়-স্বজনরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে একটি হোন্ডা ভাঙচুর করে ও তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক রওশন আলী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা দেড় শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওইদিন রাতেই মামলা দায়ের করেন। শনিবার এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
শিয়ালকোল ইউপি চেয়ারম্যান শাহজামাল আকন্দ বলেন, আসামি ছিনতাই ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় দফায় দফায় পুলিশি অভিযানে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। এলাকার নিরীহ জনগণকে পুলিশের হয়রানী থেকে বাঁচাতে আসামি তোজামকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজামাল আকন্দ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আসামি তোজাম্মেল হককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২০১৪ সালের ১ আগস্ট চন্ডিদাগাঁতী এলাকার চাল কলের মালিক হাজী মোতালেব হোসেনের সঙ্গে হাবিবুর রহমানের লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হাবিবুর রহমানের ছেলে রানাকে (৩০) পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় হাজী মোতালেব ও তার ছেলে আনোয়ার এবং পলাতক তোজামসহ বেশ কয়েকজনের নামে হত্যা মামলা করেন নিহত রানার বাবা। তোজাম ওই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।


Saturday, August 29, 2015

যমুনা চরের লাখো মানুষের ‘ভাসমান জীবন তরীর’ সুখ-দুঃখের কড়চা

যমুনা চরাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা আবর্তিত হয় এই রাক্ষুসী নদীকে ঘিরেই। তাই যমুনা চরের লাখে মানুষের ভাসমান জীবনতরীর সুখ-দুঃখের শেষ নেই। কেননা চরের জীবন মূল ভূ-খ- থেকে অনেকটাই আলাদা। স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা, জীবন-জীবিকা, অন্যান্য সেবা ও সুযোগ থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন চরের লাখো মানুষ। মূল ভূ-খ- থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরাঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবার অবস্থা খুবই করুণ। চরে কর্মসংস্থান ও আয়ের উৎস সীমাবদ্ধ। এমনো অনেক চর আছে সেখানে বংশানুক্রমে অনেক পরিবার শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শুষ্ক মৌসুমে সুখের মুখ দেখলেও বর্ষা মৌসুমে ভাসমান জীবন যাপনে কষ্টের শেষ নেই তাদের। খরা শুষ্ক মৌসুমে বিশাল বিশাল চর জেগে উঠলে সেখানে আবাদ হয় মরিচ, ধান, শাক-সবজি ও মৌসুমী ফসল। গড়ে ওঠে গরু-ছাগল প্রতিপালনের খামার। আবার বর্ষা এলেই ভাঙ্গে নদী, ভাঙ্গে জনপদ, ভাঙ্গে হাজার মানুষের কপাল। মানুষ হয় রিক্ত নিঃস্ব সর্বশান্ত। বসতভিটা মাটি, ফসল জমি যমুনা গ্রাস করে। চোখের সামনে বিলীন হয়ে যায় পিতামাতা আত্মীয়-স্বজনের শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরÑ গোরস্থান। রাক্ষুসী যমুনার করাল গ্রাসে ভেঙ্গে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভেঙ্গে পড়ে শিক্ষা কার্যক্রম। বছরের ২টি আনন্দ উৎসব ঈদ থেকে তারা হয় বঞ্চিত। রমজানে রোজা রাখা তো দূরে থাক জান বাঁচানো দায় হয়ে পড়ে। বর্ষায় থাকে না সেনিটেশন ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি, ঘরের টুইয়ে মাচাল পেতে চলে সংসার। ডাকাতি, চুরির ভয়ে ঘর ছাড়ে না কেউ। সাপের ভয়ে ঘুম পারে না অনেকে সুখের চেয়ে তাই দুঃখের পাল্লা হয় তাদের ভারী। সুবিধা বঞ্চিত এই চরবাসীর তাই দুঃখের শেষ নেই। এমন হাজারো সুখ-দুঃখ, নিয়ে জীবন সংগ্রামে জড়িয়ে আছে চরাঞ্চলের মানুষ।বর্তমান বর্ষাকালে যতদূর চোখ যায় পানি আর পানি। বর্ষাকালে বুকজুড়ে উঠে উত্তাল স্রোতের তরঙ্গ। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি আর উন্মাতাল স্রোতের ঘূর্ণাবর্তা ঢেউ-চরগ্রামে বসবাসকারী মানুষের বুকে জাগায় ভয়, শঙ্কা। কেড়ে নেয় রাতের ঘুম। কখন পাতালেও গুটাতে হয় সে চিন্তায় থাকে অস্থির। শুষ্ক মৌসুমে যমুনায় পানি না থাকলেও বর্ষাকালে তা হয় পানিতে টইটুম্বর। সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের ৫ লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের সুব্যবস্থা না থাকায় পুরো শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকে প্রায় ৮ মাস এই দুর্ভোগ থাকে। মাইলের পর মাইল বালুর চরের মধ্যদিয়ে এবং কোথাও কোথাও হাঁটুপানি পার হয়ে গ্রামে গ্রামে যাতায়াত করতে হয়। মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে কৃষি পণ্য চর থেকে শহরে আনতে গিয়ে কৃষকগণ চোখের পানি ফেলেন। কৃষি পণ্য বিক্রির পর লভাংশের বেশিরভাগই পরিবহন ব্যয় হয়। চরাঞ্চলের প্রাচীন আমলের ঘোড়ার গাড়িই মালামাল ও যাত্রী পরিবহনের একমাত্র বাহন। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও চরের বাসিন্দাদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার এক শতক পূর্ব থেকে যমুনা নদীর দক্ষিণ তীর ভাঙনের মুখে পড়ে। রংপুরের কাউলিয়া থেকে পাবনার ভেড়াকোলা পর্যন্ত যমুনা নদী বিস্তৃত। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের কাজীপুর হতে শাহজাদপুর পর্যন্ত প্রায় ৭০ কি. মি. এলাকাই যমুনার ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়ে। নদী ভাঙনে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালীর শেষ সীমানা চলে গেছে, টাঙ্গাইল জেলার নিকটবর্তীতে আবার কাজিপুর উপজেলা ভেঙ্গে মিলিত হয়েছে জামালপুর জেলার সঙ্গে। শুষ্ক মৌসুমে চৌহালী যেতে হলে টাঙ্গাইল জেলা সদর হয়ে ৪৫ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলায় আসতে হয়। একইভাবে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে যেতে হলে জামালপুর জেলা হয়ে ঘুরে আসতে হয়। স্বাধীনতার পরবর্তীতে চরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে জনমানুষে বসতী স্থাপন করে নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলা হয়। এর মধ্যে কাজিপুর উপজেলার ৭টি, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪টি, বেলকুচি উপজেলায় ৪টি, শাহজাদপুর উপজেলার ৪টি এবং চৌহালী উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন চরাঞ্চলকে ঘিরে প্রতিষ্ঠিত হয়। চরাঞ্চলের বালি মিশ্রিত মাটিতে আখ, ভুট্টা, বাদাম, কালাই, মরিচসহ বিভিন্ন মসলা ও সবজি ব্যাপকভাবে আবাদ হয়ে থাকে। নগর জীবনের আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই চরাঞ্চলবাসীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। অধিক ফসল চাষ করে শহরে এনে তারা বিক্রি করে জীবনযাপনের অধিক প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটায়। কিন্তু বিদ্যুৎ পাওয়া তাদের স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। সোলার সিস্টেমে অনেকে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলেও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় চরাঞ্চলবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বছরের পর বছর। চরাঞ্চলের দু’জন সচেতন মানুষ জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার চরাঞ্চলে এখন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নানা ফসল উৎপাদন হচ্ছে বিশেষ করে মসলা ও সবজির আবাদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকার কারণে পণ্য আনা নেয়া এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়েদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উপজেলা পরিষদে রাস্তাঘাটের প্রকল্প দেয়া হলেও তা আংশিক বাস্তবায়ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও তাদের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অথচ শুষ্ক মৌসুমজুড়েই জনগণের দাবি থাকে রাস্তা ও বাঁধ নির্মাণের। রাক্ষুসী ভাঙনে প্রতিবছর বিস্তীর্ণ এলাকা যমুনা নদীগর্ভে চলে যায়। ফলে চরএলাকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু নির্মম সত্য হলো স্বাধীনতার ৪৪ বছরে। যমুনার চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের তেমন কোন পরিবর্তন ঘটেনি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও শিক্ষার সুযোগ না পেয়ে দরিদ্র মানুষেরা দিনদিন পিছিয়ে পড়ছে। চরের আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ করা হলেও কর্মসংস্থান না থাকায় সেখানে ভূমিহীন দরিদ্র মানুষ বসবাস করতে চায় না। দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং ভূমিহীন মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, নদীভাঙন এগুলোর সাথে চরবাসীকে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। বর্ষার অখ- অবসরে চরের মানুষের হাতে তেমন কাজ থাকে না। বিভিন্ন দুর্যোগ যমুনা পাড়ের মানুষকে করেছে সংগ্রামী, সাহসী ও ধৈর্যশীল। বিপুল কৃষি ফসল ফলার অপার সম্ভাবনা থাকলেও বাস্তবে অঞ্চলটি খুবই পশ্চাৎপদ, অনগ্রসর এবং অবহেলিত। যে কারণে চরাঞ্চলে বসবাসরত কৃষির উপর নির্ভরশীল লক্ষাধিক মানুষের জীবনজীবিকা ক্রমেই সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব চরাঞ্চলের প্রকৃতি, পরিবেশ, বৈচিত্র আর জীবিকাকে নতুন করে সংকটের মুখে ফেলেছে। এখানে দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং ভূমিহীন মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করে এবং বন্যা, নদী ভাঙন ইত্যাদির সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয়। চরাঞ্চলে আউশ ধানের আবাদ কমে গেছে, বোরোর আবাদ বেড়েছে। বিভিন্ন জাতের ধান হারিয়ে গেছে। নদী ভরাট হয়ে গভীরতা কমে গেছে। বিদেশী গাছ লাগানোর প্রবণতা বেড়েছে। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউক্লিপটাস গাছ রোপণ করা হচ্ছে। কর্মসংস্থানের অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বাজারজাতকরণ কষ্টসাধ্য হওয়ায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় চরম বঞ্চনার মুখে পড়েছে কৃষক। এক সময় যাদের গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ ও গোয়াল ভরা গরু ছিল আজ তারা রিক্তনিঃস্ব স্বর্বশান্ত। বহু মানুষ অর্থ সম্পদ হারিয়ে গরিব হচ্ছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ তিন ঋতুতেই বন্যা দেখা দেয়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফসলের ফলন কমে যায়। নদীভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত মানুষ একচর গ্রাম হতে অন্য চরে চলে যাচ্ছে। বন্যার সময় চরাগ্রামের জনগোষ্ঠী ছোট দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে অনেকটা অবরুদ্ধ জীবনযাপন করে। এ এলাকার মানুষ নিরাপদ পানির জন্য নলকূপের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বন্যার কারণে প্রায় প্রতি বছরই নলকূপ ডুবে যায়, নিরাপদ পানিপ্রাপ্তি বিঘিœত হয়। বন্যা, নদীভাঙন আর দারিদ্রতা স্যানিটেশন অবস্থার উন্নয়নে প্রধান বাধা। চরাঞ্চলে পানির উৎস নলকূপ, খাল, পুকুর এবং নদী। চরগ্রামের মানুষের নিরাপদ পানি পেতে হলে টিউবওয়েলের উপর নির্ভর করতে হয়। বন্যার সময় পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রতিবছরই পানির উৎস ডুবে যায়। ফলে নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। এঅঞ্চলে বেশিরভাগ ল্যাট্রিন অস্বাস্থ্যকর। বেশিরভাগ মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন কিংবা স্যানিটেশন সম্পর্কে ধারণা নেই। চরের মানুষের পরিবার-পরিকল্পনা জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যাপারে সচেতন না হওয়ায় অধিক সন্তান জন্মদান এবং বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি। অসুখ-বিসুখে চরের মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক ও গ্রাম্য ডাক্তার, কবিরাজ, ঝাড়ফুঁক ও পানি পরার উপর নিভর্রশীল। তবে বেশিরভাগ চরে কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় তারা চিকিৎসাসেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষার হার আশাব্যঞ্জক নয়। চরাঞ্চলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা খুবই খারাপ। নদী ভাঙনে প্রতিবছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যমুনা গর্ভেবিলীন হয়ে যায়। গত ৩ বছরে সিরাজগঞ্জ জেলার শুধু চৌহালী উপজেলাতে নদী ভাঙনে ৬৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাক্ষুসী যমুনা গ্রাস করেছে। আরো অন্তত ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে নদী ভাঙনের মুখে রয়েছে। নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ঠাঁই হয়েছে কারো বাড়ির উঠান, খোলা মাঠে অথবা ওয়াবদা বাঁধে। এ কারনে ঝড়ে গেছে অন্তত দুই হাজার শিক্ষার্থী। আবার কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাননের ভেঙ্গে যাওয়া ঘরের চালের টিন দিয়ে কোন রকম ছাপড়া তুলে চলছে পাঠদান। এতে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও শিক্ষার হার না বাড়ার অন্যতম কারণ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, গ্রামে স্কুল না থাকা, অভিভাবকদের অসেচতনতা ও শিশুদের জমিতে কাজ করানো। চরের মানুষের উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে পারলে চরের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। এ বছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই যমুনা নদী ভয়ঙ্কর আকার ধারন করে ক্রমাগতভাবে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, দোকান পাট, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সরকারী-বেসরকারী স্থাপনাসহ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রাস করে। রাক্ষুসী যমুনার দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা তা-বে গত ৩ বছরে বসতিসহ ১৫ হাজার একর আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। তবে অভিজ্ঞজনের মতে সুচিন্তিত কৌশল গ্রহণ করলে চরে শান্তি সুখের সুযোগ আছে। তাদের মতে, এসব অঞ্চলে টেকসই দারিদ্র্য নিরসনে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ ও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করার সময় সকল বিষয়ে সুদৃষ্টি রাখা জরুরী। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান চরাঞ্চলের মানুষের জন্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চল নিয়ে কাজ করবে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়ন তহবিলে অগ্রাধিকার পাবে। তার মতে, দারিদ্র্য বিমোচনে টাকার অভাব নয়, আস্থার অভাবই বড়। একই সঙ্গে সম্মিলিত প্রয়াসে, অংশিদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করলে ‘দারিদ্র্যের ভূত’ অবশ্যই বিতারিত হবে। এটা বাস্তবরূপ লাভ করলে চরাঞ্চলের দুঃখ ঘুচবে অনেকাংশে।

সিরাজগঞ্জে হ্যান্ডকাপসহ হত্যা মামলার আসামী ছিনতাই

সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাপসহ হত্যা মামলার আসামী ছিনতাই হয়েছে। এ সময় ছিনতাইকৃত আসামীর আত্মীয়-স্বজনরা পুলিশের মোটর সাইকেলটি ভাঙচুর করে। শুক্রবার বিকেলে সারটিয়া খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ডিবি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওহেদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ছিনতাই হওয়া আসামী তোজাম হোসেন (৪৫) সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের উত্তর সারটিয়া গ্রামের মৃত আহম্মেদ আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ঘটনার পর থেকে আসামীকে ধরতে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। ডিবি’র ওসি আরও জানান, সাদা পোশাকে ডিবি’র উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫ জন পুলিশ উত্তর সারটিয়া আমেনা মনসুর স্কুল মাঠে খেলা দেখার সময় তোজামকে গ্রেপ্তার করে হ্যান্ডকাপ পড়ায়। এরপরই তার আত্বীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা পুলিশকে মারপিট করে তোজামকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় তারা পুলিশের মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম জানান, পলাতক তোজাম ও তার আত্বীয়-স্বজনদের গ্রেপ্তারে ডিবি ও সদর থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নেমেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১লা আগষ্ট চন্ডিদাগাতি এলাকার রাইস মিলের মালিক হাজী মোতালেব হোসেনের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ বাধে। এর জের ধরে প্রতিপক্ষ হাবিবুর রহমানের ছেলে রানাকে (৩০) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তোজাম ওই মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামী। সে এতদিন পলাতক ছিল।

Friday, August 28, 2015

সিরাজগঞ্জে হেরোইন-ইয়াবাসহ আটক ৪

সিরাজগঞ্জে ১৮৫ গ্রাম হেরোইন ও ৯০০ পিস ইয়াবাসহ মাদক সম্রাট কায়েস ওরফে বুলু ও তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মাহমুদপুর মহল্লা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এরা হলেন- মাহমুদপুর মহল্লার মৃত দানেশ আলীর ছেলে কায়েস শেখ ওরফে বুলু (৩০), একই মহল্লার আরশেদ শেখের ছেলে স্বপন সেখ (২৩), আরশেদ শেখের স্ত্রী জোসনা (৩৬) ও মৃত ফজল শেখের স্ত্রী জাকিদা বেগম।
র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মো. হাসিবুল আলম বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাহমুদপুর ১নং গলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৮৫ গ্রাম হিরোইন, ৯০০ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকাসহ ওই চারজনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার হওয়া হেরোইন ও ইয়াবার আনুমানিক মূল্য ২৩ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ডিভাইডার নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ কাজ পরিদর্শন কেরেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী বলেন, মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চালানো যাবে না। তিনি বলেন, যদি মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি দেখা যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঈদ-পূর্ব প্রস্তুতি উপলক্ষে আজ সকালে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আসন্ন ঈদের আগে মহাসড়কের উপরে ও আশপাশে কোরবানীর পশুরহাট বসানো যাবে না। কেউ এই আদেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যানজট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঈদের আগে মহাসড়কে যানজট কমানোর জন্য দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা সমূহের মধ্যে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে চন্দ্রা এলাকায় বাইলেন এবং ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে ৪টি রোড ডিভাইডার নির্মাণ কাজের ইতোমধ্যে ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর এগুলো উদ্বোধন করা হবে।
থ্রি হুইলার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এ সকল যানবাহন মহাসড়কে চলতে না দেয়ায় ইতোমধ্যেই দুর্ঘটনা কমে এসেছে। মনে রাখতে হবে, আগে হলো জীবন, তারপর জীবিকা।
এর আগে মন্ত্রী মহাসড়কে চলাচলকৃত যানবাহন চালক ও যাত্রীদের মধ্যে সচেতনামূলক লিফনেট বিতরণ করেন এবং সঠিক কাগজপত্রসহ চালানো গাড়ির চালকদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরিদর্শনকালে সড়ক বিভাগের ময়মনসিংহ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শাহাব উদ্দিন খান, পাবনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু রওশন, সেতুবিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, সিরাজগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদসহ মন্ত্রণালয়, সেতুবিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী রাজশাহীর উদ্দেশ্যে সিরাজগঞ্জ ত্যাগ করেন।

যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি

যমুনার পানি কিছুটা কমে আসায় সিরাজগঞ্জ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে পানি কমতে থাকলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। কয়েক দিনের পানি বৃদ্ধিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি প্রথম পর্যায়ে নিমজ্জিত গ্রামগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
ইতোমধ্যে যমুনা নদী তীরবর্তী ৫টি উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক অঞ্চলে বহু পরিবার ঘরবাড়ী ছেড়ে বাঁধের উপরসহ বিভিন্ন স্থানে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই বলছেন তাদের ভাগ্যে এখনও মিলছে না শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি। বন্যা দুর্গত অঞ্চলে ইতোমধ্যে জ্বর সর্দিসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়াও আভ্যন্তরীণ করতোয়া ও ফুলজোড়, গাড়াদহ নদীগুলোও ফুলে ফেপে উঠছে। বন্যায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোনা ফসল আমন, শাক, মৌসুমী শাক-সবজি, মাসকলাই ও কলাসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে পড়েছে। সরকারীভাবে সহায়তা করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
জেলা প্রশাসক বিল্লাল হোসেন জানান, পাঁচটি উপজেলার পানিবন্দী মানুষের মধ্যে ইতোমধ্যে ৭৫ মে.টন চাল ও ২ লাখ ৭০হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও কাজিপুরে ১৩টি টয়লেট, ৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৬টি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে।