বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে সরকারী দলের উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ ও পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস এতদিন ভেতরে ভেতরে ফুঁসলেও এবার প্রকাশ্যে জনসমক্ষ্যে মুখোমুখি হলেন। সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের নিচে প্রকাশ্যে জনসন্মুখে এ দু’প্রতিনিধি সরাসরি বাগ-বিতন্ডায় জড়ালেন। টেন্ডার বহির্ভূত কাজের ভাগ-বাটোয়ারা, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ ও পৌরসভায় বর্ধিত ট্যাক্সের ইস্যু নিয়ে তাদের দু’জনের এ মুখোমুখি বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। এ নিয়ে নাশকতার আশাঙ্খায় উপজেলা পরিষদে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন থানা অফিসার ইনচার্জ আনিছুর রহমান । উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পৌর মেয়রের নিকটতম আত্বীয় সাজ্জাদুল হক রেজার সাথেও একই সময়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। উভয়ের সমর্থকরা এক পর্যায়ে একে অপরের ওপর মারমুখী হবার চেষ্টা করলে উভয়ই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপজেলা চত্বর ত্যাগ করেন। এদিকে, সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সহধর্মিণী পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস ও ছাত্রলীগ নেতা রেজার সাথে উপজেলা চেয়ারম্যানের কথা কাটাকাটি ও প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে বেলকুচিতে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, আমরা সকল নেতাকর্মী দিনরাত পরিশ্রম করে জনগনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে মোহাম্মদ আলী আকন্দকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছি। কিন্তু চেয়ারম্যান হবার পর দলীয় নেতাকর্মীকে গত আড়াই বছরে মুল্যায়ন করা তো দুরের কথা, উল্টো বহিরাগত সন্ত্রাসী বাহিনী সার্বক্ষনিক সাথে নিয়ে চলাচল করায় একদিকে যেমন উপজেলা পরিষদের মর্যদা বিঘ্ন হচ্ছে, অন্যদিকে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাছারা কাজের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ। এসব বিষয় নিয়ে সোমবার দুপুরে প্রতিবাদ করায় তিনি আমাকে ও পৌর মেয়রকে অপমানিত করেছেন।
পৌর মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাস বলেন, আমরা তাকে যেমন উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছি, ঠিক তেমনি তার স্ত্রী বেগম সোনিয়া সবুরকে ইউপি চেয়ারম্যানও বানিয়েছি। কিন্তু, বর্ধিত ট্যাক্সের বিষয় নিয়ে আমার সাথে কথা না বলে প্রকাশ্যে আমাকে তার অপমান করাটা উচিৎ হয়নি। ট্যাক্স না বাড়ালে আমি কিভাবে উন্নয়ন করবো বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করবো। বিষয়টি তার বোঝা উচিৎ ছিল।
এসব বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেন, পৌর মেয়রের নিজস্ব পারিবারিক বিষয় নিয়ে উন্নয়ন সভায় আলোচনার পাশাপাশি ময়লা-অবর্জনা ও স্ট্রীট বাতির জন্য ৬/৭ গুন ট্যাক্স বাড়ানোর বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করায় পৌর মেয়র এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক গত ক’দিন আগে আমার অফিসে ঢুকে হম্বিতম্বি করে টেন্ডার বহির্ভুত কাজ দাবি করে। সেটা না দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেয়ায় সেও এ ধরনের মন্তব্য করছেন। এসব বিষয় শুধু নয়, তারা আমার ও আমার স্ত্রীর উন্নতী দেখে ইর্শ্বান্বিত হয়ে তারা এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
বেলকুচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের মধ্যে দন্ডের কারনে আমরা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে রেখেছি। গত সোমবার তাদেও মধ্যে বাক-বিতন্ডা হওয়ার কারণে নাশকতার আশাঙ্খা ছিল। এই নাশকতা ঠেকাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
0 comments:
Post a Comment