Thursday, June 9, 2016

৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনায় নির্মিত হচ্ছে ডুয়েল গেজ রেল সেতু

ঢাকাঃ যমুনা নদীতে বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘের আলাদা ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনের রেল সেতু নির্মাণের চিন্তা করছে সরকার। প্রাথমিকভাবে এর ব্যয় ধরা হচ্ছে ৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা।
জাপানভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে এ অর্থের সিংহভাগ ঋণে হিসেবে পাবে সরকার। শিগগিরিই এই প্রকল্প সংক্রান্ত এক প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে বলে রেল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, এই রেল সেতুর এক পাশে টাঙ্গাইল জেলা অন্যপাশে সিরাজগঞ্জ। নতুন এই রেল সেতু নির্মাণ হলে উত্তর অঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। একই সঙ্গে রেলের মাধ্যমে ভারি মালামাল পরিবহন সম্ভব হবে। চালু করা যাবে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া কন্টেইনার পরিবহন। এতে তৃণমূল পর্যায়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে। তাছাড়া নতুন রেল সেতুর মাধ্যমে গ্যাস লাইন যাবে।
প্রস্তাবিত এই রেল সেতুতে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান থাকবে। সেতুর দুই পাশে দুই রেলস্টেশনে স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটার বেজড ইন্টারলিংকিং (সিবিআই) সিগন্যালিং ব্যবস্থা থাকবে। সেতু বরাবর গ্যাস পাইপলাইনও থাকবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সেতুটির কাজ শেষ করতে চায় রেলওয়ে।
রেলপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিসহ বেশকিছু কাজ এগিয়ে গেছে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে।
দেশে বর্তমানে ২ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। রেলের মাস্টারপ্লান অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শেষ হলে রেলপথের দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ৪ হাজার ৭৩০ কিলোমিটারে। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ২৬টি ট্রেন চলাচল করে। ২০২৩ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ৩০ অতিক্রম করবে।
২০৪৩ সালে যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৭০টি ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আটটি কন্টেইনার, চারটি পেট্রোলিয়াম ও দুটি খনিজবাহী ট্রেন চলাচল করবে। সবকিছু বিবেচনায় নতুন সেতু অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন রেল সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রেল মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শশী কুমার সিংহ বলেন, বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন চলাচল করছে। সেতুর ওপরে ধীরগতিতে রেলপথে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া আমরা ভারি পণ্য পরিবহন করতে পারছি না। এ কারণে যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশ দিয়ে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেতুটি নির্মাণে জাইকার ঋণ প্রায় চূড়ান্ত।

0 comments:

Post a Comment