মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত ৪১ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। ফলে এই প্রথমবারের মত রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেন বীরাঙ্গনারা।
সুপারিশ অনুসারে প্রথম দফায় ৪১ জনকে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হল। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা)’র কাছে আরও ১২১ জন বীরাঙ্গনার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি চেয়ে করা আবেদন জমা রয়েছে। এ সব আবেদন উপজেলা পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে শিগগিরই গেজেট প্রকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আবেদনকারীদের বাইরে আরও অনেকে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তবে সামাজিক কারণে তারা আবেদন করছেন না।
তালিকা অনুসারে বীরাঙ্গনাদের মধ্যে গেজেটে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেন সিরাজগঞ্জের সর্বোচ্চ ১৩ জন বীরাঙ্গনা । তারা হলেন-ফকিরপাড়া গ্রামের আয়মনা, চুলিয়াহাতির আছিয়া বেগম, রহমতগঞ্জের (নতুন ভাঙ্গাবাড়ি) সূর্য বেগম, বিন্দুপাড়া দত্তবাড়ির কমলা বেওয়া, তেঁতুলিয়া পশ্চিমপাড়ার জয়গন, পিটিআই স্কুলপাড়ার ছুরাইয়া খাতুন, সয়াধনগাড়া পূর্বপাড়ার মাহেলা বেওয়া, কান্দাপাড়ার ফকিরপাড়ার হামিদা বেওয়া, কান্দাপাড়ার হাসনা বেগম, চাঁদপুর ঝাউলের রাজুবালা দে, চককুবদাশপাড়ার রহিমা বেওয়া, সদরের ছামেনা খাতুন ও সয়াধনগাড়ার শামসুন্নাহার বেওয়া। ময়মনসিংহের ফতেহপুর গ্রামের ময়মনা খাতুন। এই জেলা থেকে আরও তিনজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তারা হলেন, নাকাগাঁও (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের হালিমা খাতুন, খন্দকপাড়ার জাহেরা খাতুন ও বালিচান্দার ফাতেমা খাতুন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের স্বীকৃতি পেয়েছেন ১০ জন। তারা হলেন নরশিরা গ্রামের রাবিয়া বেগম, রেনু বেগম, রাহেলা বেগম, চৌকামনাকষার মালেকা বেগম, লক্ষ্মীনারায়ণপুরের হাসিনা বেগম, লালাপুরের জালো বেগম, বড় বঙ্গেশ্বরপুরের সফেদা বেগম, আয়েশা বেগম, সাহাপুরের হাজেরা বেগম ও আরবী বেগম। এ ছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ের ছয়জন, কুষ্টিয়ার চারজন এবং হবিগঞ্জ, সিলেট ও রংপুরের একজন করে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের ছয়জন হলেন রাউতনগর গ্রামের সুমি বাসুগী, মনি কিসকু, হাফেজা বেওয়া, নিয়ানপুরের মালেকা, শিদলীর নিহারানী দাস ও পকম্বার নূরজাহান বেগম। কুষ্টিয়ার চারজন হলেন হাসিমপুর গ্রামের এলেজান বেগম, মটমালিয়াটের মোমেনা খাতুন, দোলাজান নেছা ও নাতুরিয়ার মজিরন নেছা। সিলেটের মনতৈল গ্রামের এশনু বেগম, হবিগঞ্জের বেলঘর গ্রামের মাজেদা বেগম ওরফে মাজেদা খাতুন ও রংপুরের কাছনা তকিয়ারপাড়ার মনছুরা বেগম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন।
মহিলা কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিটি গঠনের পাশাপাশি পুরো বিষয়টি তত্ত্বাবধানের জন্য সাংসদ মোতাহার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়। সাব কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি ও জামুকার সদস্য মেজর (অব.) ওয়াকার হাসান (বীরপ্রতীক)