যমুনা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন। গত ৪/৫ দিনে সদর উপজেলার বালিঘুগরী-পাঁচঠাকুরী নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধ ভেঙে প্রায় ২শ’ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি।
গত তিন দিনে এ ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। এদিকে, বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া শতাধিক পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীর অভিযোগ, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকে এ ভাঙন শুরু হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড’র (পাউবো) কর্মকর্তারা একবারও ভাঙন কবলিত এলাকার খোঁজ-খবর নেননি।
বুধবার (০৭ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে শত শত ভাঙন কবলিত মানুষের দুর্ভোগের কথা জানা যায়। এ সময় তারা বার বার ভাঙনের কারণ হিসেবে পাউবো’র উদাসিনতা ও দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করেন।
স্থানীয় শিমলা গ্রামের কৃষক শুকুর আলী, শাহ আলী, শাহজাহান আলী, রফিকুল ইসলাম, গৃহিণী হাওয়া বেগম ও ডিগ্রি পাড়ার আমিনুল ইসলামসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা হয়।
তারা জানান, যমুনার পানি কমতে থাকায় নদীর মাঝখানে চর জেগে ওঠেছে। আর সেই থেকেই শুরু হয় ভাঙন। ভাঙনের ফলে বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া প্রায় শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে। এদের কেউ কেউ অন্যের জমিতে ঘর তৈরি করে কষ্টে দিন যাপন করছেন। কেউ বা আবার স্বজনদের বাড়িতে ঠাঁই নিয়েছ্নে।
এদিকে, পাঁচঠাকুরী এলাকার গৃহিণী সবুরা বেগম ও শিমলা গ্রামের হাওয়া বেগম জানান, নদী থেকে মাত্র ২০ থেকে ৫০ গজ দূরে তাদের বাড়ির অবস্থান। তাই যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে তাদের বাড়ি। এ আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
শিমলা গ্রামের বাসিন্দা সিঙ্গাপুর প্রবাসী আব্দুর রউফ জানান, বালিঘুগরী, শিমলা, পাঁচঠাকুরী ও চরপাড়া এলাকার মধ্যে এক কিলোমিটার জায়গা বার বারই নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে। অন্যান্য এলাকার চেয়ে এই এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তারিকুল ইসলাম জানান, গত বছর এ এলাকায় ভাঙন শুরু হলেও যমুনার গতিপথ পরিবর্তনে পাউবো থেকে দু’টি ড্রেজার আনা হলেও তা বেশিরভাগ সময় বসিয়ে রাখা হয়।
এ বিষয়ে ড্রেজার বিভাগের প্রকৌশলী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, ড্রেজিংয়ের শিডিউল অনুযায়ী আমাদের কাজ শেষ হয়েছে। আড়াই কিলোমিটার ড্রেজিং করে একটি চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে। নতুন করে ড্রেজিং করার কোনো নির্দেশনা নেই।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বাংলানিউজকে জানান, নদীর পানি কমতে থাকায় স্লাইড (হালকা) ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে এ নিয়ে আশঙ্কার কিছু নেই। পরিস্থিতি পাউবো’র নিয়ন্ত্রণে আছে এবং জিওব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment