সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জর পৌর এলাকায় ৩-৪ তলা বাড়ির নকশার অনুমোদন নিয়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে ৬-৭ তলা ভবন। অবৈধভাবে গড়ে উঠা এসব ভবনের পাশের বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা এসব ভবনের কারণে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
আর এতে কোনো নজরদারী নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। তারা বলছেন, পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে সঠিক তদারকি করা যাচ্ছে না। আর এমন ভবনের সংখ্যা পৌর সভায় অসংখ্য।
অভিযোগ রয়েছে, সম্প্রতি শহরের গোশালা এলাকায় জনৈক একাব্বর আলী সিরাজগঞ্জ পৌরসভা থেকে চারতলা বাড়ির নকশার অনুমোদন নেন। পরবর্তীতে তিনি এটি সম্প্রসারিত করে ৬তলা ভবন করছেন। বিষয়টি পাশের ভবনের মালিকদের নজরে এলে বিষয়টি পৌরসভার মেয়র ও নগর পরিকল্পনাবিদের কাছে অভিযোগ দেন। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ।
পাশের ভবনের মালিক আব্দুস সালাম অভিযোগ করে জানান, ভবনটির কাজের শুরুতেই মিথ্যা তথ্য এবং পৌরসভার অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে তার চারতলা বাড়ির অনুমোদন নেন। পরবির্তিতে বাড়ির কাজ শুরু করে ছয়তলা বাড়ি নির্মাণ করেন।
আমরা পৌরসভায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি চারতলা বাড়ির অনুমোদন নিয়েছেন। কিন্তু ছয়তলা বাড়ি করার সময় উপরের অংশে চারপাশে বেশী জায়গা নিয়ে অন্যদের অসুবিধার সৃষ্টি করেন। এ বিষয়টি অভিযোগ আকারে পৌরসভায় জানালেও এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ।
একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সামাদ খান ও আব্দুস সালাম জানান, আমরা দীর্ঘদিন থেকেই এই এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছি। কিন্তু একাব্বর আলী বাড়ির কাজ শুরু থেকেই সকলের সঙ্গে নানা কারণে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি বিল্ডিং নির্মাণের কোন নিয়মই না মেনে বাড়ির কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি অনুমোদনহীনভাবে ছয়তলা ভবন করায় আমরা শঙ্কার মধ্যে আছি। বড় কোন প্রাকৃতিক দর্যোগ হলে আমরা দুর্ঘটনায় পড়ার আশঙ্কা করছি।
তবে ছয়তলা ভবন নির্মাণের কথা অস্বীকার করে নতুন ভবনের মালিক একাব্বর আলী জানান, নকশা অনুমোদন নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। আর চারতলার উপরে শুধু একটি চিলেকোঠা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে কারো সমস্যা হবার কথা নয়। আর অনুমোদন না থাকলে সেটি দেখার দায়িত্ব পৌরসভার। অন্য কারো নয়।
এ বিষয়ে নিয়ে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার শহর পরিকলপনাবিদ মুশফিক আহমেদ জানান, যে বাড়িটি নিয়ে আলোচনা উঠে এসেছে এটি ছাড়াও শহরে আরো অনেক এমন অবৈধ ভবন রয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল না থাকা আর জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতার কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, যে বাড়িটি নিয়ে বর্তমানে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সেটি আমি সরজমিনে পরিদর্শন করিনি। তবে আমার সার্ভেয়ার সেটি দেখে আমাকে নোট দিয়েছে আমি অনুমোদনের জন্য সাবমিট করেছি। তবে ভবনের মালিক যদি অবৈধভাবে ৪ তলার জায়গায় ৬ তলা নির্মাণ করে থাকেন তার বিরুদ্ধে আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।