Tuesday, August 9, 2016

ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরির কারখানায় জড়িয়ে গেল ১৯ পুলিশ সদস্য

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহিদুর রেজা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরির কারখানা তৈরি করে লক্ষ লক্ষ টাকার হাতিয়ে নিয়েছে। একজন প্রকৃতি মুক্তিযোদ্ধা কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদ দিয়ে চাকুরি দেয় তা নিয়ে চলছে হিসাব নিকাশ।
বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহিদুর রেজা ভূয়া সনদ তৈরি করে শুধু চাকুরিই নয়, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, স্ত্রী বানিয়ে দিয়েছে শহিদুর রেজা। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সূত্রে জানা যায়, শহিদুর রেজা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে সেই টাকার বিনিময়ে, ত্রিতল ভবন নির্মান করে বসবাস করছে। সে বাড়ি নিয়েও বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিনে মামলা চলছে। সে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব থেকে বহিস্কৃত অবস্থায় রয়েছে।
এলাকা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার অন্যতম ঘনিষ্ট সহযোগি ছিলেন, বয়ড়াবাড়ী গ্রামের মৃত খলিলুর সরকার এর পুত্র গাজী গোলজার সরকার। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী শহিদুর রেজা রাজাপুর ইউনিয়নের সমেশপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। মঙ্গলবার সকালে গাজী শহিদুর রেজার বাড়িতে খবর নিয়ে জানা যায়, সে বর্তমানে বাড়িতে নেই। স্থানীয় ও এলাকাবাসী বলছে, দুদক যদি বেলকুচি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা সনদের যাচাই বাছাই কমিটি তৈরি করে অভিযান চালায় তাহলে আরও ভূয়া সনদ বের হয়ে আসবে।
স্থানীয় ও এলাকাবাসী আরও জানায়, একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়ে কি করে সে আজ ভূয়া সনদ তৈরি করে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দিচ্ছে। আসলে সে একজন কলংকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া আর কিছুই নয়। দুর্নীতির শেষ বলতে কিছু আছে, আজ তা প্রমানিত হলো দুদকের মাধ্যমে।
গাজী শহিদুর রেজার ভূয়া সনদে চাকরী পাওয়া পুলিশ বিভাগে শিক্ষানবিশ কনস্টেবল পদে যোগদানকারী সদস্য বেলকুচি উপজেলার চরজোকনালা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আইয়ুব আলী, আদাচাকী গ্রামের সুরমান আলীর ছেলে মোঃ কামরুল ইসলাম, আনছার আলীর ছেলে সবুজ মিয়া, ছানাউল্লাহ শেখের ছেলে আব্দুল কুদ্দুছ শেখ, চরমেটুয়ানি গ্রামের শহিদ আলীর ছেলে মোঃ আলী আব্বাছ, ধুকুরিয়াবেড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী, কাজীপুরা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে মোঃ আবু হানিফ, খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম, কোনাবাড়ী গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে মোঃ ফেরদৌস, চররায়পুর গ্রামের শাহাতদ হোসেনের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম, কল্যাণপুর ধুল গাগরাখালী গ্রামের আজহার আলীর ছেলে মোঃ হায়দার আলী, সড়াতৈল গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মোঃ বুদ্ধি মিয়া, তেয়াশিয়া গ্রামের গোবিন্দ চন্দ্র সরকারের ছেলে সুমন কুমার সরকার, বিশ্বাসবাড়ী গ্রামের সুজাবত আলীর ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম, চর মেটুয়ানি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে মোঃ আব্দুল আউয়াল, কল্যাণপুর গ্রামের মৃত গণি সরকারের ছেলে মোঃ আমিরুল ইসলাম, দক্ষিণ বানিয়াগাতি গ্রামের রজব আলীর ছেলে মোঃ আল আমিন, বয়রাবাড়ী গ্রামের সোনাউল্লাহ মণ্ডলের ছেলে মোঃ সোহেল রানা ও তার ভাই মোঃ সুমন আহম্মেদ।
উল্লেখ্য, ২০১২ ও ২০১৪ সালে বাবা ও দাদার মুক্তিযোদ্ধার জাল সনদ ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধার কোটায় তারা পুলিশ বিভাগে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে ভর্তি ও যোগদান করেন। তাদেরকে গতকাল সোমবার বিকেলে পাবনা জেলার চাঁদা খার বাঁশতলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের খবর প্রকাশ হওয়ার পর পর ১৯জন পুলিশ সদস্যর পরিবারের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।

0 comments:

Post a Comment