সিরাজগঞ্জ: চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জের ছয়টি উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নের প্রায় পৌনে ৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় দুই সপ্তাহ বন্যার পানি থাকায় এসব এলাকার ঘরবাড়ি, ফসল, রাস্তা-ঘাট ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (১০ আগস্ট) জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার সাতটি, কাজিপুরের ১০টি, বেলকুচির ছয়টি, চৌহালীর সাতটি, উল্লাপাড়ার সাতটি ও শাহজাদপুরের ১০টি ইউনিয়নের মোট ৫২৪টি গ্রামের এক লাখ ৩৪ হাজার ৫৭৭টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৩০টি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ হাজার ৮২৯টি।
এছাড়া বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬৯টি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৮৭টি। রাস্তা-ঘাট সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১২ কিলোমিটার ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২২৭ কিলোমিটার।
এদিকে, কৃষি অফিস সূত্র জানান, বন্যায় জেলার সাত উপজেলায় ১৫ হাজার ছয় হেক্টর কৃষি জমির আমন ধান, আউশ ধান, পাট, কলা, ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান নষ্ট হয়ে গেছে।
সব কিছু মিলিয়ে বন্যায় পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮১ জন মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ওয়ালি উদ্দিন জানান, এ পর্যন্ত বানভাসী মানুষের মধ্যে ৭৯০ মেট্রিক টন চাল ও ৩৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ প্রতিদিনকে জানান, ৪১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ওঠায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ সব বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর এসব প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে চালু হয়েছে। এছাড়া সুবিধাজনক সময়ে পরীক্ষা নিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. ওমর আলী শেখ সিরাজগঞ্জ প্রতিদিনকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা ও ক্ষতির পরিমাণ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, কৃষকদের পুনর্বাবাসনে সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন সিরাজগঞ্জ প্রতিদিনকে জানান, চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অবকাঠামো, রাস্তাঘাট মেরামত করা হবে। এছাড়া দরিদ্র ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
0 comments:
Post a Comment