দেশে কেউ মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জিকা ভাইরাস: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’-বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম একথা বলেন। তিনি বলেন, যে কোনো রোগী চিহ্নিত হলে সমস্ত চিকিৎসা ব্যয় আমরাই দেব। ডাক্তারের কাছে আমরা নিয়ে যাব। তারপর ফলোআপ করব।দেশে জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলেও জানান মন্ত্রী। গতবছর ব্রাজিলে নতুন করে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মেলার পর মাত্র চার মাসের মধ্যে বহু দেশে তা ছড়িয়ে পড়ে। এর বাহক এডিস এজিপ্টি মশা।জিকা ভাইরাসে সচরাচর মৃত্যুর ঘটনা দেখা যায় না। এর লক্ষণও সবসময় স্পষ্ট থাকে না। এই ভাইরাস সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হয়ে এসেছে নবজাতকদের নিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গর্ভবতী মা জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার অনাগত শিশুর মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হতে পারে, মস্তিষ্কের গঠন থাকতে পারে অপূর্ণ। এ রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি। এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম ও বেশি করে তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। জিকা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় এক সপ্তাহ আগে বিশ্বময় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংসদে জিকা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সর্বশক্তি নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতি আহ্বান, আপনারা আশ্বস্ত থাকুন। এই ভাইরাস দেশে কোনোভাবেই সংক্রমিত হতে পারবে না। সরকার জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে। সব আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বারে মেডিকেল টিমের কার্যক্রম নিশ্চিত করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে জিকা ভাইরাস স্ক্রিনিং মনিটর করতে ওয়েব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং সম্ভাব্য জিকা ভাইরাসের সংক্রমনণরোধে এডিস মশা নিধনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা ঘোষণার দুইদিনের মধ্যে সব সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে ইমেইলের মাধ্যমে জিকা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। নাসিম বলেন, এরই মধ্যে জিকা ভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং জরুরি অবস্থা মোকাবেলার জন্য ‘প্রিপেয়ার্ডনেস প্লান’ করা হয়েছে। মন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে গণমাধ্যমে জিকা ভাইরাস সংক্রান্ত সংবাদ প্রচার করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মো. নূরুল হক বলেন, জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যাক্তিদের চিকিৎসার জন্য কুর্মিটোলায় (কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল) ২০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড করা আছে।
0 comments:
Post a Comment