আজ ২৯ জানুয়ারী ২০১৭ইং রবিবার ধানমন্ডি সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ তায়কোয়াডো ফেডারেশন এর দক্ষিন কোরিয়া হতে আগত ০৪ সদস্য বিশিষ্ট কোরিয়ান তায়কোয়ানডো প্রশিক্ষক দ্বারা ১০ দিন দিনব্যাপী“তায়কোয়ানডো প্রশিক্ষন কর্মশালার সমাপনী ও সনদপত্র বিতরন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন- মনে রাখতে হবে পড়ে শেখার চেয়ে-করে শেখা জরুরি। ব্যর্থতা কোনো বাধা নয়। আমরা লক্ষ্যটা এত বড় রাখি যেন দু-এক বার ব্যর্থ হওয়াটা স্বাভাবিক মনে হয়। যদি তুমি খুব কঠিন কিছু নিয়ে কাজ করো, যা আর কেউ করছে না, চালিয়ে যাও। কারণ তোমার কোনো প্রতিযোগিতা নেই। তুমি যদি ব্যর্থও হও, নিশ্চয়ই একটা ভালো কিছু পাবে। অন্যের দিকে মন না দিয়ে নিজের কাজটার প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ তোমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে বাছাইকৃত প্রতিভাবান খেলোয়াড়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু যেমন বদলে যাচ্ছে, তেমনি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা বা পড়ালেখার ধরনটা, খেলাধূলার বিষয়টা, সামাজিক, পারিবারিক এমনকি রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চয় বদলানো উচিত। যে সব ক্রীড়া ডিসিপ্লিন অন্তর্ভক্ত হয়েছে তায়কোয়ানডো তার মধ্যে অন্যতম। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নিদের্শে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে ৪২ লক্ষ টাকা বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন বরাদ্দ পেয়েছে। বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আমি বিশ্বাস করি ক্রীড়ার মাধ্যমে দেশে সুশৃঙ্খল যুব সমাজ গঠন সম্ভব, যারা দেশকে ভবিষ্যতে দেশকে সমৃদ্ধিশালী ও প্রগতিশীল করে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সময়োপযোগী তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিভা অন্বেষনের মতো প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া বহুলাংশে সমৃদ্ধশালী হয়েছে। আমার পক্ষ হতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই যুগপোযোগী পদক্ষেপের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি আরও ধন্যবাদ জানাই প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ঠ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের সকল কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকবৃন্দকে।
অভিজ্ঞতা বলে একটা কথা আছে- পাঠ্য বইয়ের পেছনে সময় দেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরের পৃথিবীতে কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়। সেখানে কাজের অভিজ্ঞতার গুরুত্ব বেশী। তাই বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হবে। ঝুঁকি নিতে হবে। খোঁজো কোন কাজটা তুমি ভালবস, সেটাই মন লাগিয়ে করো। একাডেমিক পড়ালেখাও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ততটা নয়, যতটা গুরুত্ব আমরা দিই। জীবন একটা দীর্ঘ যাত্রা। তাই আমি যা করছি, তা উপভোগ করা জরুরি। একজন নেতা হিসেবে আমার কাজ হলো-অন্য নেতাদের সামনে থেকে বাধাগুলো সরিয়ে দেওয়া। তাদের বিশ্বাস করা, স্বাধীনতা দেওয়া, তাদের সফল করা। আমি বিশ্বাস করি নেতৃত্ব দেওয়া মানে নিজে সফল হওয়া নয়। বরং এটা নিশ্চিত করা যে, আমার সঙ্গে যারা কাজ করছেন, তারাও সফল হচ্ছেন। আশা আর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখে সেটা অনুসরণ করতে পারাটাই বড়। যদি কোনো স্বপ্নই না থাকে, তাহলে সামনে এগোনোর গতিটা দেবে কে? শেষ পর্যন্ত কোথায় পৌঁছাতে চাও, সেটা জানা থাকুক না থাকুক, স্বপ্ন থাকতেই হবে। লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য স্থির মনোভাব থাকাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খুব দূরের ভবিষ্যতের দিকে না তাকিয়ে ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। বর্তমান সময়ে বেঁচে থাকার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। জীবনের নানা পর্যায়ের সমস্যা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেই সফল হতে হয়। সফল হওয়ার জন্য বিনয়ীও নম্র হওয়াটাই সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কঠোর পরিশ্রম ছাড়া এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই। সবকিছুকে সরল ভাবতে পারাটাই এগোনোর সাহস জোগায়। তবে কোন ক্ষেত্রে ভাল, তা জানতে হবে। অন্যদের চেয়ে বেশী পরিশ্রম করতে না পারিলে লক্ষ্য স্পর্শ করা যাবে না। জীবনে সব কিছুর ভারসাম্য রক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। বাস্তববাদী হতে হবে। বাস্তববাদী হতে হলে দুঃখ-কষ্ট-বাধা বিপত্তিকে বরণ করে নিতে হবে। দুঃখ-কষ্ট যে পাপের ফল, তোমাকে কে বলিল? নবী-রসূল এত দুঃখ কষ্ট পেলেন কেন? ইচ্ছা আর একাগ্রতা থাকলে অনেক কিছু অর্জন সম্ভব। পরিবর্তনের এটাই সুযোগ। দায়িত্বের ভার যেন তোমাকে থমকে না দেয়, বরং সাহস জোগায়। জীবনের কঠিনতম সিদ্ধান্তগুলো নিতে যারা সাহায্য করেছে বা করছে সেই মা, ভাই-বোন, কোন শিক্ষক, বন্ধু, আমরা তাদের পাশে থাকবো। আমি সব সময় বর্তমান নিয়ে বাঁচতে ভালোবাসি। সব কিছুকে একটু ভেঙ্গে ভেঙ্গে ভাবতে পছন্দ করি। আমার কাছে কাজে-কথায় হেরে যাওয়াটা ভাবার বিষয় নয়, বরং ভুলটা কোথায় হলো, সেটা জানাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আবার কথায় কথায় ফাস্ট হওয়া বা কাজে জিতে যাওয়া বা আনন্দিত হওয়াও কিন্তু সব না। বরং কোন জায়গায় উন্নতি করা দরকার, সাকসেস হওয়া প্রয়োজন সেটা বলতে পারাটাই জরুরি। আমি মনে করি, তুমি যখন শারীরিকভাবে ক্লান্তিবোধ কর তখনো কিন্তু চাইলে সামনে এগিয়ে যেতে পার। যতক্ষণ না তুমি মানসিকভাবে ক্লান্ত হচ্ছো, ততক্ষণ তুমি আসলে ক্লান্ত না। আমরা ফিজিক্যাল হেল্থ নিয়ে চিন্তিত কিন্তু মেনটাল হেল্থ নিয়ে চিন্তিত নয়। কেন? ফিজিক্যাল ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন। এই মানসিক ট্রিটমেন্ট হচ্ছে তাইকুন্ডু।
উল্লেখ্য যে, গত ০৯ই জানুয়ারী, ২০১৭ইং তারিখে বাংলাদেশ তায়কোয়নডো ফেডারেশনের উদ্যোগে দক্ষিণ কোরিয়া হতে ০৪ সদস্য বিশিষ্ট তায়কোয়ানডোর উপর বিশেজ্ঞ প্রশিক্ষক দল ৪২ দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসেছে। সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের তায়কোয়ানডো খেলোয়াড়দের আরো উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন উক্ত প্রশিক্ষক দলের তত্ত্বাবধানে গত ২০শে জানুয়ারী হতে ১০ দিনের জন্য সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একটি বিশেষ তায়কোয়ানডো প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের প্রায় ২০০ জন তায়কোয়ানডো খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। আজ ২৯শে জানুয়ারী, ২০১৭ ইং তারিখ (রবিবার) বিকাল ৩.৩০ টায় উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী ও প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী তায়কোয়ানডো খেলোয়াড়দের মাঝে সনদপত্র বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক জনাব মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী তায়কোয়ানডো খেলোয়াড়দের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন ও প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম রানা সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষকবৃন্দ। আরো উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, কার্যনির্বাহী সদস্য রওশন জামির রানা, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক তাসভীরুল হক অনু প্রমুখ।
0 comments:
Post a Comment