স্টাফ রিপোর্টারঃ সিরাজগঞ্জ জেলায় এ পর্যন্ত ১৬ জন ছাত্র যুবক নিখোঁজ হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এরা নিখোঁজ রয়েছে বলে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে জানা গেছে। ১১ জনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংশিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ সদর থানার পাঁচজন, উল্লাপাড়া থানার চারজন, কাজীপুর থানার একজন এবং চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানায় একজন রয়েছেন।
তারা হল উল্লাপাড়া উপজেলার রাউতান গ্রামের হায়দার আলী সিদ্দিকির ছেলে জাভেদ সিদ্দিক (২৫), দাদপুর গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে হাফেজ আবদুল মোমিন (২৭), সেখ পাড়া গ্রামের কে এম সিরাজুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল ইসলাম (২৩) ও চুড়ুইমুরী গ্রামের আনসেদ প্রামাণিকের ছেলে হাফেজ মাসুদ রানা (২৭)। চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর থানার ছারোয়ার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন (১৬)। কাজীপুর উপজেলার বেরী পোটল গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে আরমান রেজা (১৫)। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘলগাতী গ্রামের মৃত হাজী খলিলুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩৫), রাঙ্গালিয়া গাতী গ্রামের মনির“জ্জামানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৭), মৃত আফজাল হোসেন খানের ছেলে কাওছার খান (৪০), পশ্চিম গজারিয়া গ্রামের আবদুল সেখের ছেলে আবদুল মোমিন (২৩) এবং শাহজাদপুর উপজেলার উল্টাডাব গ্রামের আবদুল হামিদ সরকারের ছেলে হাবিবুর রহমান (২৭)।
এ ছাড়া সাধারণ ডায়েরি করা হয়নি এমন আরও ৫ জন ছেলের নিখোঁজ হওয়ার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশে অপারগতা জানিয়েছে। তারা বলেছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের বয়স ১৪-৩০ বছর। এরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজদের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে তাদের অধিকাংশই ছাত্র। এর মধ্যে মাদ্রাসা ও পলিটেকনিকের ছাত্র বেশি। পরিবারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন থানায় করা ডায়েরি থেকে জানা গেছে, এসব ছেলে দেড় বছর ধরে নিখোঁজ। বাড়ির কাউকে না জানিয়ে তারা হঠাৎ বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেছে। এর পর আর তারা পরিবারের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেনি। এদের মধ্যে যারা মুঠোফোন ব্যবহার করত তাদের ফোনগুলো নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে।
সংশিষ্ট থানার ওসিরা জানান, এনায়েতপুর থানার জাকির হোসেন দশম শ্রেণির ছাত্র। সে গত ২ জুলাই নিখোঁজ হয়। সে ঘরে ভাইদের সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকার পর রাতের কোনো এক সময় ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়। উল্লাপাড়া দুর্গানগর ইউনিয়নের বালসাবাড়ি মাদ্রাসা থেকে হাফেজ আবদুল মোমিন আট মাস আগে তাবলিগে যাওয়ার কথা বলে কাকরাইলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান নেই। বাকি নিখোঁজরা বাড়ি থেকে নিজেদের ইচ্ছায় চলে গেছে। এসব বিষয়ে পরিবারও সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিশেষ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে করা সাধারণ ডায়েরি থেকে এদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপর দিকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়নি অথচ নিখোঁজ রয়েছে এমন আরও ৫ ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, সিরাজগঞ্জে এখন পর্যন্ত জঙ্গি হামলার কোনো ঘটনা না ঘটলেও হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সিরাজগঞ্জে কতিপয় ব্যক্তি ওই নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে সিরাজগঞ্জের বাইরে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে।
0 comments:
Post a Comment