Wednesday, August 12, 2015

সিরাজগঞ্জে পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে ১৬ রেলস্লিপার উদ্ধার

সিরাজগঞ্জে রেল বিভাগের চুরি হওয়া
১৬টি রেলস্লিপার উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিরাজগঞ্জ জিআরপি পুলিশ সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার কামারখন্দ উপজেলা ঝাঐল গ্রামের মৃত হেলাল হোসেনের পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে কাঠের স্লিপারগুলো উদ্ধার করে। তবে চুরির সাথে জড়িত থাকা আব্দুর রাজ্জাককে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রেল সড়কের ঝাঐল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র রেলের স্লিপার ও ক্লিপ চুরি করে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে গত তিন দিন পূর্বে ঝাঐল বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক রাতের আঁধারে নিজ বাড়ি থেকে মাত্র সামান্য দূরে মৃত হেলাল হোসেনের পরিত্যক্ত বাড়িতে ১৬টি মূল্যবান কাঠের রেল স্লিপার চুরি করে
রেখে দেন। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দারা জানতে
পেরে সিরাজগঞ্জ জিআরপি পুলিশকে খবর দেয়।
কিন্তু সেখানে পুলিশ গিয়ে মালামাল পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে টালবাহানা করে। পরে সংবাদকর্মীরা বিষয়টি বুঝতে পারায় জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বললে রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রীর নিকট থেকে চাবি নিয়ে ওই বাড়ির একটি কক্ষে রাখা ১৬টি কাঠের
স্লিপার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে মালামাল উদ্ধার হওয়া বাড়ির প্রতিবেশী মৃত শাহজাহান সরকারের স্ত্রী রিজিয়া পারভীন জানান, পাশের বাড়ির চাবি তার নিকটই থাকতো। ধান ক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য ওই বাড়ির একটি কক্ষে শ্যালোমেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম রাখা হতো। গত তিনদিন পূর্বে আব্দুর রাজ্জাক এসে তার নিকট চাবি চাইলে তিনি চাবি দেন এবং সেখানে নতুন তালা লাগিয়ে পুরান তালা তার নিকট ফেরত দেন। কিন্তু ওই ঘরে কি
রাখা হয়েছে তা তাকে বলা হয়নি।
মৃত শাহজাহান সরকারের ভাতিজা ও কলেজ ছাত্র সেলিম রেজা জানান, সোমবার রাতে পুলিশ এলে তারা ও এলাকাবাসী জানতে পারেন সরকারি রেলের কাঠ রাখা হয়েছে ওই ঘরে।
সিরাজগঞ্জ জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেনের বরাত দিয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) হায়দার আলী জানান, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। রেল বিভাগের মামলার আবেদন পাওয়া গেলেই তদন্ত শুরু করা হবে। রেলস্লিপার চুরির সাথে জড়িত আব্দুর রাজ্জাক প্রভাবশালী হওয়ায় কাঠগুলো উদ্ধার করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। যেহেতু রাজ্জাকের স্ত্রীর দেওয়া চাবির মাধ্যমেই মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে সেহেতু তাকেই প্রধান আসামি করা হবে। এর সাথে আরো কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে।
এদিকে গত মাসে তিনবার সিরাজগঞ্জ থেকে
ঢাকাগামী সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইঞ্জিন
ও বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এরপর সংস্কার কাজ শুরু করে রেল বিভাগ। কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারির যোগসাজসেই রেল স্লিপারগুলো
চোরাকারবারীদের হাতে গিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ রেল বিভাগেরে ঊর্ধ্বতন উপবিভাগীয়
প্রকৌশলী (ওয়ে) আশরাফ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে জিআরপি থানা পুলিশের সাথে আলোচনা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। সরকারি সম্পত্তি চুরি ও বাড়িতে লুকিয়ে রাখার অপরাধে এ মামলা দায়ের করা হবে।

0 comments:

Post a Comment