Wednesday, January 18, 2017

উল্লাপাড়া-উধুনিয়া সড়কের বেহাল দশা, গত ১০ বছরে সংস্কারের ছোয়া লাগেনি


কার্পেটিং উঠে গেছে বহু আগে। সড়কের মাটির অংশও দেবে গেছে। বেশির ভাগ স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। যানবাহন চলাচল তো পরের ব্যাপার, হাঁটাই রীতিমতো দুরূহ। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর বাজার থেকে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়কের এই করুণ দশা গত ১০ বছর ধরে।

স্থানীয় লোকজন জানান, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে চলনবিলের মাঝখান দিয়ে উল্লাপাড়া-উধুনিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের এক বছরের মাথায় ওই সড়কের মোহনপুর বাজারের পশ্চিম অংশ থেকে উধুনিয়া পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার অংশ বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যায়। এরপর আর সংস্কার না হওয়ায় কার্পেটিং উঠে যায়। বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। সেগুলো বিস্তৃত হতে থাকে। বর্তমানে সড়কের ওই অংশে মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো যান চলাচল করে না। বর্ষায় হেঁটে চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়ে সড়কটি।

গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও পানি জমে ডোবার মতো হয়ে আছে। দুই পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় সেতুগুলো কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে।

উধুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওলি দাস তাঁর বাবার বাগি উল্লাপাড়ার সোনতলা গ্রাম থেকে বস্তায় মালামাল নিয়ে হেঁটেযাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এবা করাই গত ১০ বছর বাবার বাড়িতে যাওয়া-আসা করি। রাস্তা খারাপ হের লাইগ্যা কোনো আত্মীয়স্বজনও আসে না।’ একই গ্রামের নাসিমা বেগম বলেন, ‘এই রাস্তার লাইগ্যা আমাগো গ্রামের কোনো মেয়ের ভালো বিয়া হইতেছে না। ভালো পরিবারের লোকজন আসে না। এভাবে আর কত দিন চইলব, আল্লাহই জানে।’

মোহনপুর বাজারের ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, ২০১২ সালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়কটি পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন ছয় মাসের মধ্যে মেরামতকাজ শুরু করতে। কিন্তু চার বছর অতিবাহিত হলেও কিছুই হয়নি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আশরাফ আলী বলেন, প্রায় দেড় শ কোটি টাকা ব্যয়েউল্লাপাড়ার শ্যামলীপাড়া থেকে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ময়দানদীঘি বাজার পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেটি ফেরত পাঠানো হয়েছে। সড়ক বিভাগের বিশেষজ্ঞরা রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে মতামত দেওয়ার পর আবার নতুন করে প্রকল্প দেওয়া হবে। তবে ভেঙে ভেঙে অল্প টাকার মধ্যে সড়কটির উধুনিয়া পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার অংশ মেরামত করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে।

স্থানীয় সাংসদ তানভীর ইমাম বলেন, ‘সড়কটির বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এটি বড় ধরনের কাজ বিধায় সময় লাগছে। আশা করি, প্রকল্প অনুমোদনের পর কিছুদিনের মধ্যেই মেরামতকাজ শুরু করা যাবে।’

0 comments:

Post a Comment