Thursday, July 30, 2015

ধেয়ে আসছে কোমেন, ৭নং সতর্কতা সঙ্কেত

উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর- উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘KOMEN’ ( WITH ECP 988 HPA)
এ পরিণত হয়েছে।
বুধবার রাতে আবহাওয়া বিভাগের বিশেষ
বুলেটিনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, এটি রাত ৯টায়
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০ কি. মি.
দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে
১০৫ কি.মি. পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে, মংলা
সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কি. মি. দক্ষিণপূর্বে
এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৫ কি. মি.
দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে
বৃহস্পতিবার দুপুর/বিকাল নাগাদ বরিশাল-
চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও
তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা
এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো
হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কি. মি. এর মধ্যে
বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায়
৬২ কি.মি. যা দমকা অথবা
ঝড়োহাওয়ার আকারে ৮৮ কি. মি. পর্যন্ত
বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের নিকটে
সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৪
নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে এর
পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা
হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার,
চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী,
চাঁদপুর, ভোলা, জেলাসমূহ এবং তাদের
অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ
সংকেত বিপদ সঙ্কেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান
বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, উপকূলের
লোকজনকে পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে
যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে
মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও রেড
অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা
গেছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মুখপাত্র জাফর আলম
বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, বন্দরের সব
কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব
জাহাজ বন্দরের জেটিতে রয়েছে
সেগুলোকে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে নিরাপদ
দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে। আর যেসব
বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষমাণ সেগুলোকে
ইঞ্জিন চালু রেখে সতর্কাবস্থায় থাকতে
বলা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায়
জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান
তিনি।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড.
অনুপম সাহা জানান, এছাড়া কক্সবাজার
বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত
করা হয়েছে, ইনানী বিচে ট্রলার ডুবে ৬ জন
নিখোঁজ। এ জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লোকজনকে
আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে
সেন্টমার্টিনে ঝড়ের আঘাতে বেশ কিছু
ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা
গেছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৪ নম্বর
স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে এর
পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা
হয়েছে। উপকূলীয় জেলা বরগুনা, পটুয়াখালী,
বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট,
খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী
দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেতের
আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা
কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর,
ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল,
পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর,
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের
অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল
স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক
উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের অতিক্রমকালে কক্সবাজার,
চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী,
চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা,
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ
এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী
থেকে অতি ভারী বর্ষণ সহ ঘন্টায় ৭০-৯০
কি.মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে
যেতে পারে।
অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে চট্রগ্রাম
বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও
কোথাও ভূমি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা
ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত
নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

0 comments:

Post a Comment