সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন

সিরাজগঞ্জের সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা অনলাইন নিউজ সাইট

বঙ্গবন্ধু বহুমুখি সেতু

যমুনা সেতু তথা যমুনা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপরে অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিলোমিটার। এটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সেতু। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ইহা যমুনা নাদীর পূর্ব তীরের ভূয়াপুর এবং পশ্চিম তীরের সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করে। এইটি বিশ্বে ১১তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু।

ইলিয়ট ব্রিজ

ইলিয়ট ব্রিজ সিরাজগঞ্জ শহরের কাটা খালের উপরে লোহা ও সিমেন্টের সমন্বয়ে তৈরী। সিরাজগঞ্জ শহরকে দেখার জন্য কাঁটাখালের উপরে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু করে ইংরেজ এসডিও মিঃ বিটসন বেল আই, সি, এস, সাহেব ১৮৯৫ সনে ৪৫,০০০ টাকা খরচ করে বাংলার তৎকালিন ছোট লাট স্যার আল ফ্রেড ইলিয়ট সাহেবের নামানুসারে এই ব্রিজ তৈরী করেছিলেন। নামানুসারে এই ব্রিজ তৈরী করেছিলেন।

Thursday, July 30, 2015

প্রভাবশালীদের কেন্দ্র করে দুটি বলয়ে বিভক্ত দল

প্রায় এক দশক পর গত ৮ জানুয়ারি
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের
সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে সমঝোতার
মাধ্যমে কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক
নির্বাচন করা হয়। এরপর গত সাত মাসেও আর
পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা সম্ভব হয়নি।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের
সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রভাবশালী
নেতাদের কেন্দ্র করে এখানকার আওয়ামী
লীগের রাজনীতিতে দুটি বলয় তৈরি হয়েছে।
এর মধ্যে একটি বলয় গড়ে উঠেছে
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে কেন্দ্র
করে। তাঁর সঙ্গে আছেন জেলা কমিটির
সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা
চেয়ারম্যান এ এম গোলাম কিবরিয়া। অপর
বলয়ের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব হলেন সিরাজগঞ্জ-২
(সদর-কামারখন্দ) আসনের সাংসদ হাবিবে
মিল্লাত। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়। তাঁর
সঙ্গে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের
সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। সাবেক
মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস এখন জেলা পরিষদের
প্রশাসক।
দুই পক্ষই জেলার রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ
প্রতিষ্ঠা ও সংগঠনকে কবজায় রাখতে
সচেষ্ট রয়েছে। দুই পক্ষই চায় নিজ নিজ
বলয়ের নেতাদের কমিটিতে ঢোকাতে। এ
নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে পূর্ণাঙ্গ
কমিটি করার কাজ আটকে আছে বলে
অভিযোগ আছে।
যদিও লতিফ বিশ্বাস দাবি করেন, স্থানীয়
নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে ধারণা নিতে একটু
সময় লাগছে। এ কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে
দেরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের
সঙ্গে আলোচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব
পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। তিনি দাবি করেন,
জেলা আওয়ামী লীগে নেতাদের মধ্যে
কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তবে প্রতিযোগিতার
প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। নেতা-কর্মীদের
কারও মধ্যে যদি দ্বন্দ্ব থেকেও থাকে, তার
কোনো বহিঃপ্রকাশ নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের
কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, মোহাম্মদ
নাসিম ও হাবিবে মিল্লাতের মধ্যে
প্রকাশ্যে কোনো দ্বন্দ্ব না থাকলেও দলে
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুজনের মধ্যে ঠান্ডা
লড়াই চলছে। এ কারণে নেতা-কর্মীরাও দুটি
ধারায় বিভক্তি হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়ভাবে প্রচার আছে যে পরবর্তী
নির্বাচন সামনে রেখে মোহাম্মদ নাসিম
তাঁর বড় ছেলেকে সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-
সদর আংশিক) আসনে এবং নিজেকে
সিরাজগঞ্জ-২ (সদর) আসনে প্রতিষ্ঠিত করার
জন্যও চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সাংসদ
হাবিবে মিল্লাত প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়
হওয়ায় তাঁকে কোণঠাসা করা কষ্টসাধ্য হয়ে
পড়েছে।
এর আগে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে
মোহাম্মদ নাসিম প্রার্থী হতে না পারায়
সিরাজগঞ্জ-১ আসনে তাঁর ছেলে তানভীর
শাকিল ওরফে জয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন
নিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। এ আসন থেকে
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দলের
মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ হন মোহাম্মদ
নাসিম।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য
যোগাযোগ করা হলে প্রথম আলোর সঙ্গে
কথা বলতে চাননি মোহাম্মদ নাসিম। তাঁর
ঘনিষ্ঠ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক এ এম গোলাম কিবরিয়া দাবি
করেন, জেলার শীর্ষ নেতাদের মধ্যে
রাজনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ে কোনো দ্বন্দ্ব
নেই। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছুটা বিতর্ক
রয়েছে।
হাবিবে মিল্লাতও দাবি করেন, তাঁদের মধ্যে
অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দল বা বিভেদ
নেই। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকতে
পারে। এটা থাকা স্বাভাবিক। তিনি
অভিযোগ করেন, এলাকার রাজনীতিতে
দীর্ঘদিন ধরে গঠনতান্ত্রিকভাবে অযাচিত
হস্তক্ষেপ প্রথা চালু রয়েছে। এ প্রক্রিয়া দল
ও এলাকার জন্য ক্ষতিকর।

জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২১ নির্দেশনা

জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের সাধারণ মানুষের কাছাকাছি অবস্থান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে সব ধরনের ভয়ভীতি ও প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে
আইনের আওতায় কাজ করার কথাও বলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে
আয়োজিত তিন দিন ব্যাপী জেলা প্রশাসক
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে
প্রধানমন্ত্রী এ সব নির্দেশনা দেন। রাষ্ট্র তথা
জনগণের স্বার্থ সংরক্ষণই হবে আপনাদের মূল
লক্ষ্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,
সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে
অবিচল থাকলে আপনাদের পক্ষে যথাযথভাবে
দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, সরকারি সেবা গ্রহণে কেউ যেন
হয়রানি বা বঞ্চনার শিকার না হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন,
পাচার ও মাদক দ্রব্যের অপব্যবহারসহ যৌতুক ও
বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে। প্রতিবন্ধী,
অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর কল্যাণে
বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। গ্রামীণ
অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় স্থানীয় মাঝারি
শিল্পের বিকাশে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ সময় জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর
লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে সহায়তা করার
নির্দেশনাও দেন প্রধানমন্ত্রী।
সম্মেলনে জেলা প্রশাসকদের পাশাপাশি, বিভাগীয়
কমিশনার, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী,
উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব এবং সচিবসহ সংশ্লিষ্ট
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন।
সম্মেলনে মোট ২২টি অধিবেশন হবে। এর
মধ্যে কার্য অধিবেশন থাকবে ১৮টি।
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ
হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের জানান, অংশগ্রহণকারী
মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৩৯টি হলেও দুই থেকে তিনটি
মন্ত্রণালয় একত্রিত করে মোট ১৮টি অধিবেশনে
সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। সম্মেলনে ডিসিদের
পক্ষ থেকে ২৫৩টি প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে
২৫টি প্রস্তাব ভূমি এবং ২৪টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের।
প্রধানমন্ত্রীর ২১টি নির্দেশনা-
১. সরকারি সেবা গ্রহণে কেউ যেন হয়রানি বা
বঞ্চনার শিকার না হয়;
২. নারী ও শিশু নির্যাতন, পাচার ও মাদক দ্রব্যের
অপব্যবহারসহ যৌতুক ও বাল্যবিবাহ রোধ করতে
হবে;
৩. প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক ও পিছিয়ে থাকা
জনগোষ্ঠীর কল্যাণে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে
হবে;
৪. গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্ভাবনাময়
স্থানীয় মাঝারি শিল্পের বিকাশে ব্যবস্থা নিতে
হবে;
৫. জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছানোর
লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে সহায়তা করতে
হবে;
৬. তৃণমূল পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনপ্রতিনিধিদের
সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে হবে;
৭. নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি, ছাত্রছাত্রীদের ঝরে
পড়ার হার কমানো এবং ঝরে পড়াদের মূল ধারায়
ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে;
৮. ভূমি শাসন ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি
এবং সরকারি ভূমি রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে;
৯. কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, বীজ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি
ইত্যাদি সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে
প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে
হবে।
১০. ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বাজারজাতকরণ প্রতিরোধে
ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে;
১১. পরিবেশ রক্ষার জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ
সংক্রান্ত আইন ও বিধিবিধানের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত
করতে হবে;
১২. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় প্রশমনে
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ এবং এ সংক্রান্ত
স্থায়ী নির্দেশনাবলি অনুসারে সঠিক সময়ে সঠিক
পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে;
১৩. সাধারণ মানুষকে সহজে সুবিচার প্রদান ও
আদালতে মামলার জট কমাতে গ্রাম
আদালতগুলোকে কার্যকর করতে হবে;
১৪. জেলা প্রশাসকেরা জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন
কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ
কমিটিকে আরো সক্রিয়, গতিশীল ও ফলপ্রসূ
করতে হবে;
১৫. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করতে
জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে;
১৬. শিল্পাঞ্চলের শান্তিরক্ষা, পণ্য পরিবহন ও
আমদানি-রফতানি নির্বিঘ্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে
হবে।
১৭. ভোক্তা অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে
হবে এবং বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির যে
কোনো প্রচেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করতে
হবে;
১৮. নারী উন্নয়ন নীতি- ২০১১ দৃঢ়ভাবে অনুসরণ ও
বাস্তবায়ন করতে হবে;
১৯. শিশুকিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের
লক্ষ্যে শিক্ষা, ক্রীড়া, বিনোদন ও সৃজনশীল
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ নিশ্চিত করতে
হবে।
২০. কঠোরভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক চোরাচালান এবং
এর অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে;
২১. পার্বত্য জেলাগুলোর ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য,
বনাঞ্চল, নদী জলাশয়, প্রাণিসম্পদ এবং
গিরিশৃঙ্গগুলোর সৌন্দর্য সংরক্ষণ করতে হবে।

সিরাজগঞ্জে আইএস সদস্য সন্দেহে আটক ১

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আইএস সদস্য
সন্দেহে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে
পুলিশ। বুধবার বিকেলে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের জিন্দানী পীরের মাজার থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানান তাড়াশ থানার ওসি এটিএম আমিনুল ইসলাম।
আটক হাবিবুন নবী (৪২) কুমিল্লার দেবীদ্বার
উপজেলার বড়কান্দা গ্রামের আব্দুল হাই বক্সীর
ছেলে।
ওসি জানান, হাবিবুন ১২ বছর সৌদি প্রবাসী ছিলেন। কিছু দিন আগে দেশে ফেরার পর থেকে মাজার এলাকায় অবস্থান করছিল তিনি। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিজিএফআই) নির্দেশনায় এবংমাজারের সহকারী মুত্তাওয়ালী অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট শাবেদ আলীর সহযোগিতায় তাকে আটক করা হয়।
আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আটক হাবিবুন সাংবাদিকদের জানান, তিনি কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। সুফি মতানুসারী বলে মাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
ঘটনার পর র্যাব-১২ একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলে জানান ওসি।

ধেয়ে আসছে কোমেন, ৭নং সতর্কতা সঙ্কেত

উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি সামান্য উত্তর- উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর এবং ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘KOMEN’ ( WITH ECP 988 HPA)
এ পরিণত হয়েছে।
বুধবার রাতে আবহাওয়া বিভাগের বিশেষ
বুলেটিনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, এটি রাত ৯টায়
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১০ কি. মি.
দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে
১০৫ কি.মি. পশ্চিম-উত্তরপশ্চিমে, মংলা
সমুদ্রবন্দর থেকে ১৭০ কি. মি. দক্ষিণপূর্বে
এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮৫ কি. মি.
দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে
বৃহস্পতিবার দুপুর/বিকাল নাগাদ বরিশাল-
চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও
তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা
এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো
হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৫৪ কি. মি. এর মধ্যে
বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায়
৬২ কি.মি. যা দমকা অথবা
ঝড়োহাওয়ার আকারে ৮৮ কি. মি. পর্যন্ত
বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের নিকটে
সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৪
নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে এর
পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা
হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার,
চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী,
চাঁদপুর, ভোলা, জেলাসমূহ এবং তাদের
অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ
সংকেত বিপদ সঙ্কেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান
বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, উপকূলের
লোকজনকে পার্শ্ববর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে
যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে
মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরেও রেড
অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা
গেছে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মুখপাত্র জাফর আলম
বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, বন্দরের সব
কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেসব
জাহাজ বন্দরের জেটিতে রয়েছে
সেগুলোকে কর্ণফুলীর মোহনা থেকে নিরাপদ
দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে। আর যেসব
বহির্নোঙ্গরে অপেক্ষমাণ সেগুলোকে
ইঞ্জিন চালু রেখে সতর্কাবস্থায় থাকতে
বলা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায়
জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান
তিনি।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ড.
অনুপম সাহা জানান, এছাড়া কক্সবাজার
বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা স্থগিত
করা হয়েছে, ইনানী বিচে ট্রলার ডুবে ৬ জন
নিখোঁজ। এ জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লোকজনকে
আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে
সেন্টমার্টিনে ঝড়ের আঘাতে বেশ কিছু
ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা
গেছে।
মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৪ নম্বর
স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে এর
পরিবর্তে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা
হয়েছে। উপকূলীয় জেলা বরগুনা, পটুয়াখালী,
বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট,
খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী
দ্বীপ ও চরসমূহ ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেতের
আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা
কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর,
ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল,
পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর,
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের
অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল
স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক
উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের অতিক্রমকালে কক্সবাজার,
চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী,
চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা,
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ
এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী
থেকে অতি ভারী বর্ষণ সহ ঘন্টায় ৭০-৯০
কি.মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে
যেতে পারে।
অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে চট্রগ্রাম
বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও
কোথাও ভূমি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা
ও ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজসমূহকে
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত
নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

চারদিনে তিনবার লাইনচ্যুত ট্রেন: ফের জোড়াতালির সংস্কার

মাত্র চারদিনের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস
ট্রেন সিরাজগঞ্জ-ঈশ্বরদী রেলপথে তিনবার
লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনার পর পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগ নড়েচড়ে বসেছে। তারা রেল লাইন সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।
তবে সেই পুরনো নিয়মেই জোড়াতালি দিয়ে
লাইন মেরামত ও সংস্কার করছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের বাজার স্টেশন থেকে
রায়পুর হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে শহীদ
এম.মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১০কিমি
লুপ-লাইনের সংস্কার কাজ পুরাতন স্লিপার দিয়ে করা হচ্ছে।
ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় পর সিরাজগঞ্জ রেল
বিভাগের স্থায়ীপথ পরিদর্শক ঊর্ধ্বতন উপ-
সহকারী প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন ও লাইনম্যান গোলাম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
আর পাকশী রেল বিভাগের ঊর্ধ্বতন
দু’কর্মকর্তার শাস্তিমূলক বদলি হওয়ায় বাকিরা শাস্তি আতঙ্কে রয়েছেন।
লাইনচ্যুতির ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভগের গঠিত দু’টি পৃথক তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশ ক’জন
কর্মকর্তা, কর্মচারী ও লাইনম্যানের দায়িত্বে
অবহেলার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। আর এ
কারণে নতুন করে অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক
ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে- এ আশঙ্কায়
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
সার্বক্ষণিক সিরাজগঞ্জ এসে মাঠ পর্যায়ে সংস্কার
ও মেরামত কাজ পরিদর্শণ করছেন। দেরিতে
হলেও তারা এখন অতিমাত্রায় আগ্রহী হয়ে
সিরাজগঞ্জে রয়েছেন। দম ফেলার সময় নেই
কর্মকর্তাদের। সে সঙ্গে শ্রমিক ও কর্মচারীদের।
সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার বিষয়টি
এখন যেন সিরাজগঞ্জবাসীর জন্য আর্শীবাদ
হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিরাজগঞ্জ জেলার এ ১০ কিমি
লুপ-লাইনের সংস্কার ও মেরামত কাজ দীর্ঘদিন
থেকে শুরু না হলেও দুর্ঘটনার কারণে বর্তমানে
পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেদের
চাকরি বাঁচাতে কাজ করতে হুমড়ি খেয়ে
পড়েছে। রাজশাহী বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী
মাহবুবুল আলম বকশী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আহম্মেদ মাসুম, পাকশী রেল বিভাগের ডিভিশনাল রেল ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন, ডিভিশনাল প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজীসহ প্রায় ডজন খানেক পশ্চিমাঞ্চল রেল বিভাগের কর্মকর্তা ঘন ঘন সিরাজগঞ্জ আসছেন। শতাধিক কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক সংস্কার কাজে এরই মধ্যে অংশ নিয়েছেন।
পাকশী রেল বিভাগের ডিভিশনাল রেল ব্যবস্থাপক আফজাল হোসেন সোমবার সিরাজগঞ্জের রায়পুর থেকে বাজার স্টেশন পর্যন্ত সংস্কার কাজ দেখতে এসে বলেন, এখন দ্রুত লাইন সংস্কারকরাটাই মূল কাজ। তদন্তে প্রসঙ্গে বলেন তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রেল বিভাগের এ অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যাপক গাফলাতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর মাঠ পর্যায়ে থাকা অতিরিক্ত
প্রধান প্রকৌশলী আহম্মেদ মাসুম বলেন, বৃষ্টি
প্রধান অন্তরায় হলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও
কর্মচারীদের গাফলাতি ছিল। সবাইকেই শাস্তি
পেতে হবে। কিন্তু মেরামত ও সংস্কার কাজের
স্বার্থে আপাতত গাফলাতি করা কর্মকর্তা ও
কর্মচারীদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। কাজ
শেষে নামও প্রকাশ করা হবে, পাশাপাশি শাস্তিও
দেওয়া হবে।

Wednesday, July 29, 2015

ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে শাহজাদপুরে যমুনা নদীর স্পার,কোন উদ্যোগ নাই

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাপক
ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলার
শাহজাদপুর উপজেলা কৈজুরী ইউনিয়নে। এতে
প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন
হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। কৈজুরী
ইউনিয়নের ঘুধিবাড়ী এলাকায় এর আগের
আওয়ামিলিগসরকারের সময় পানি উন্নয়ন
বোর্ডের ১২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত
স্পার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে
আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। জরুরী
ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় নদীভাঙন রোধে
জরুরী ভিত্তিতে মেরামত প্রয়োজন। ভাঙ্গন
প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জরুরী
হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
পানি বৃদ্ধির কারণে পরিবারের লোকজনেরা
অভাব অনটনে ভুগছে এবং দূর-দূরান্ত এলাকায়
কাজের জন্য যেতে পারছে না নারী-
পুরুষেরা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কের পাশেই
বসবাস করছে অর্ধশতাধিক পরিবার। নদী
ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় এলাকাবাসী পানি
উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করলেও তারা
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না এতে
এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কৈজুরী ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত গৃহবধু
খোদেজা বেগম বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি
পাওয়ায় আমার ঘরবাড়ী নিয়ে বিপদে পড়ে
আছি। যেকোন সময় ঘরটি পানিতে তলিয়ে
যেতে পারে। এখন ঘর ভেঙে অন্যত্র যাওয়ার
প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
ইউনিয়ন স্বেছাসেবক লীগের এক নেতা নাম
প্রকাশ নাকরে বলেন। সাবেক সাংসদ চয়ন
ইসলামের সময় নদী ভাঙ্গন রোধে যে কাজ
করা হয়েছিল, তারপর আর স্পারের
সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় নাই।
স্থানীয় বর্তমান এম পি হাসিবুর রহমান স্বপন
এমনকি শাহজাদুর উপজেলা আওয়ামীলীগের
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কৈজুরী ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলামও
এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহন করে নাই ।
এলাকাবাসী জানান, যমুনা নদীর পানি
বৃদ্ধির কারণে কৈজুরী ইউনিয়নের বিভিন্ন
রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভাট এলাকায় তীব্র
ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে স্থানীয়
এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে
হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই ভাঙনরোধ না করা
গেলে এই ইউনিয়নের বিশাল একটি অংশ নদী
গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ভাঙনরোধকল্পে
তাই এলাকাবাসী সরাসরি মাননীয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরী হস্তক্ষেপ
কামনা করেছেন।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় এখন পর্যন্ত স্থানীয়
উপজেলা চেয়ারম্যন বা এম পি বা প্রশাসনের
কোন ব্যাক্তিই পরিদর্সনে যান নাই । এই
নিয়েও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ
কড়ছে।

সাকা চৌধুরীর ফাঁসি বহাল

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য
সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর
ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল
রেখেছেন সু্প্রিম কোর্টের আপিল
বিভাগ।
সাকা চৌধুরীর আপিল আবেদন খারিজ
করে দিয়ে বুধবার (২৯ জুলাই) প্রধান
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার
নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ
রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন-
বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা,
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২
সাকা চৌধুরীকে যে চার হত্যা-গণহত্যার
দায়ে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছিলেন
সেগুলোর সাজাই বহাল রেখেছেন
সর্বোচ্চ আদালত। ফলে চূড়ান্ত রায়েও
অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা (৩ নম্বর
অভিযোগ), রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে
তিনজনকে গণহত্যা (৫ নম্বর অভিযোগ),
রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ৫০-৫৫ জনকে
গণহত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ) এবং চট্টগ্রাম
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ
মোজাফফর আহম্মদ ও তার ছেলে শেখ
আলমগীরকে হত্যার(৮ নম্বর অভিযোগ)
দায়ে ফাঁসির আদেশ হয়েছে তার।
অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত নয়টি
অভিযোগের মধ্যে অন্য তিনটি
অভিযোগের প্রত্যেকটিতে ২০ বছর এবং
আরো দু’টি অভিযোগের প্রতিটিতে পাঁচ
বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া
হয়েছিল তাকে। সব মিলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের
পাশাপাশি মোট ৭০ বছরের কারাদণ্ড
পান তিনি। এর মধ্যে শুধু রাউজানের
সতীশ চন্দ্র পালিতকে হত্যার (৭ নম্বর
অভিযোগ) দায় থেকে আপিল বিভাগের
রায়ে খালাস পেয়েছেন তিনি, যে
অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড
প্রদান করা হয়। এর ফলে মৃত্যুদণ্ডের
পাশাপাশি মোট ৫০ বছরের কারাদণ্ড
বহাল থাকলো।
বহাল থাকা অন্য চার অভিযোগের
দণ্ডাদেশের মধ্যে রাউজানের গহিরা
গ্রামের হিন্দুপাড়ায় গণহত্যা(২ নম্বর
অভিযোগ) ও জগৎমল্লপাড়ায় ৩২ জনকে
গণহত্যার(৪ নম্বর অভিযোগ) দায়ে ২০ বছর
করে ৪০ বছর এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক
নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ, সিরাজ ও
ওয়াহেদ ওরফে ঝুনু পাগলাকে অপহরণ
করে নির্যাতন(১৭ নম্বর অভিযোগ) এবং
চান্দগাঁওয়ের সালেহউদ্দিনকে অপহরণ
করে সাকা চৌধুরীর পারিবারিক
বাসভবন গুডসহিলে নিয়ে নির্যাতনের (১৮
নম্বর অভিযোগ) দায়ে ৫ বছর করে আরো
১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে
সাকাকে।
ট্রাইব্যুনালে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে
আনা মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট
২৩টি অভিযোগের মধ্যে ১৭টির পক্ষে
সাক্ষী হাজির করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
সেগুলোর মধ্যে দোষী সাব্যস্ত করা নয়টি
বাদে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না
হওয়া বাকি আটটি অভিযোগ থেকে
তাকে খালাস দেওয়া হয়। এছাড়া
রাষ্ট্রপক্ষ যে ছয়টি অভিযোগের পক্ষে
সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করেননি সেগুলো
থেকেও সাকা চৌধুরীকে খালাস দেওয়া
হয়। এ ১৪টি অভিযোগের বিষয়েও
ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রেখেছেন
আপিল বিভাগ।
গত ৭ জুলাই যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট)
উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আপিল শুনানি
শেষ হওয়ায় ২৯ জুলাই রায়ের দিন ধার্য
করেন আপিল বিভাগ। গত ১৬ জুন শুরু হয়ে
১৩ কার্যদিবসে এ আপিল শুনানি শেষ হয়।
৫ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত তিন
কার্যদিবসে সাকা চৌধুরীর পক্ষে
যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার
আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও
এসএম শাহজাহান। এর আগে প্রথমে
আসামিপক্ষের শুনানিতে ১৬ থেকে ৩০
জুন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের রায়,
সাক্ষীদের সাক্ষ্য-জেরা এবং রায়
সংক্রান্ত নথিপত্র (পেপারবুক) উপস্থাপন
করেন এসএম শাহজাহান।
অন্যদিকে গত ৩০ জুন এবং ১ ও ৭ জুলাই
তিন কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষে সাকা
চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন
করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে
আলম।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ১
অক্টোবর বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য
সাকা চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে
কবীর, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও
বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে
গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায়
দেন।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর খালাস চেয়ে
আপিল বিভাগে আপিল করেন সাকা
চৌধুরী। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায়
আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।
এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে আপিল
বিভাগে আসা পঞ্চম আপিল মামলার
চূড়ান্ত রায় ঘোষিত হলো, যেসব রায়ে
চার শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীই পেয়েছেন
ফাঁসির আদেশ।
গত ১৬ জুন সর্বশেষ চূড়ান্ত রায়ে
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
একাত্তরের বদর প্রধান আলী আহসান
মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল
রাখেন আপিল বিভাগ। এ আপিল মামলার
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরে রায়
পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করার
সুযোগ পাবেন মুজাহিদ।
২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে
ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হয়
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল ‘মিরপুরের কসাই’ আব্দুল
কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড। তাকে দেওয়া
ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাবজ্জীবন
কারাদণ্ডাদেশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ সাজা
নির্ধারণ করে দিয়ে ওই বছরের ১৭
সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত রায় দেন আপিল
বিভাগ।
গত ১২ এপ্রিল কার্যকর করা হয়
জামায়াতের অপর সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর ময়মনসিংহ
অঞ্চলের নৃশংস যুদ্ধাপরাধের হোতা
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায়।
গত বছরের ৩ নভেম্বর তাকে দেওয়া
ট্রাইব্যুনাল-২ এর ফাঁসির রায় বহাল
থাকে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ে।
অন্যদিকে জামায়াতের নায়েবে আমির
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে
ট্রাইব্যুনাল-১ ফাঁসির আদেশ দিলেও গত
বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর সাজা কমিয়ে
আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আপিল
বিভাগ। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি
প্রকাশের পর রিভিউ আবেদনের মাধ্যমে
ফাঁসির রায় পুনর্বহালের আরজি
জানানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন
রাষ্ট্রপক্ষ।