Thursday, June 11, 2015

সিরাজগঞ্জে ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন

সিরাজগঞ্জে ঘূর্ণিঝড়ে সহস্রাধিক
ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বিধ্বস্ত
হয়েছে। প্রায় ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে
পড়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
এদিকে, নলকা-সিরাজগঞ্জ, সয়দাবাদ-বেলকুচি,
কড্ডা-সমেশপুর ও কাজিপুর-সিরাজগঞ্জ
আঞ্চলিক সড়কের দু’পাশের গাছপালা ভেঙে
পড়েছে। ঝড়ে গাছের ডালপালা ভেঙে ও
বিধ্বস্ত ঘরের নিচে চাপা পড়ে বিভিন্ন গ্রামের
অন্তত ১০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে
জানা গেছে।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া মহাসড়কের
কুটিরচর এলাকায় রাস্তার ওপর গাছ ভেঙে পড়ায়
ওই রাস্তায় সকাল ৮টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ
থাকে। পরে স্থানীয় লোকজন গাছগুলো
সরিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) ভোরে জেলার
বেলকুচি, কামারখন্দ, রায়গঞ্জ ও সদর
উপজেলার ওপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়।
বেলকুচি উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ
আলী আকন্দ বাংলানিউজকে জানান, উপজেলার
রাজাপুর ইউনিয়নের সমেশপুর, রাজাপুর,
আমবাড়ীয়া, ভাদুরিয়া, কদমতলী গ্রামের
আশপাশের ৫/৬ টি গ্রামের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়
বয়ে যায়।
এতে পাঁচ শতাধিক কাঁচা-অর্ধপাকা বাড়ি-
ঘর বিধ্বস্ত হয়। সমেশপুর বাজারের
শতবর্ষের দু’টি পুরনো বটগাছ উপড়ে পড়ে
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাজারের বেশ কয়েকটি
দোকানপাট। এছাড়াও তিনটি বৈদ্যুতিক খুঁটি
ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে
পড়েছে।
বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর গ্রামের ইয়াহিয়া,
মো. সাইফুল মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক, হাজী
আবু বক্কার মোল্লা, আমবাড়িয়া গ্রামের জাকির
হোসেন, মানিক, রাজাপুর দক্ষিণপাড়া আলতাফ
মোল্লা, সবার উদ্দিন, ইসমাইল মোল্লা,
সমেশপুর বাজারের অমলেশ কুমার ঘোষ,
অক্ষয় কুমার ঘোষ ও হরমুজ আলী আকন্দ
সহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা জানান, ঝড়ে তাদের
বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট বিধ্বস্ত হয়েছে।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
বাংলানিউজকে জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির
কাজ চলছে। তালিকা সংগ্রহের পর
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া
রাস্তায় ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে যোগাযোগ
ব্যবস্থা ইতোমধ্যে সচল করা হয়েছে।
কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
(ইউএনও) ইশরাত ফারজানা বাংলানিউজকে জানান,
উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের কুটিরচর, মধ্য
ভদ্রঘাট, বাজার ভদ্রঘাটসহ আশপাশের বেশ
কয়েকটি গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত
হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা
তৈরির জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে।
রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউপি চেয়ারম্যান
আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, সকালের
ঝড়ে পাঙ্গাসী ইউনিয়নের প্রায় ৩৫টি বাড়িঘর
বিধ্বস্ত হয়েছে।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনালের
ম্যানেজার মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান,
রায়গঞ্জ, বেলকুচি ও কামারখন্দ উপজেলার
মোট ৫৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ায়
বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।
ইতোমধ্যে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ছয় ঠিকাদার
নিয়োগ করা হয়েছে। প্রায় ৭০/৭৫ জন শ্রমিক
কাজ করছে। আশা করা যাচ্ছে শুক্রবার সন্ধ্যার
মধ্যে সব বিদ্যুৎ লাইনে সঞ্চালন প্রক্রিয়া চালু
সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন
বাংলানিউজকে জানান, ঝড়ে ক্ষতির সঠিক খবর
এখনো পাওয়া যায়নি। বিস্তারিত তথ্য পেলে
ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0 comments:

Post a Comment