Wednesday, May 27, 2015

সিরাজগঞ্জে বাগবাটি গণহত্যা দিবস আজ

আজ ২৭ মে বাগবাটি গণহত্যা
দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি
সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা
সিরাজগঞ্জের বাগবাটি গ্রাম অবরোধ করে
নির্মমভাবে দুই শতাধিক মানুষ হত্যা করে।
অথচ স্বাধীনতার ৪৪ বছরের মধ্যে ছোট্ট
একটি নামফলক স্থাপন ছাড়া গণকবর ও
বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা গণকবর সংরক্ষণের দাবি
জানিয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তান
সেনাবাহিনী সিরাজগঞ্জ শহর দখলে নেয়।
তাদের নিপীড়ন থেকে আত্মরক্ষায় শত শত
হিন্দু নারী-পুরুষ ও শিশু শহর ছেড়ে জেলার
বাগবাটি, হরিণাগোপাল, পিপুলবাড়িয়া ও
ধলডোব গ্রামে আশ্রয় নেন। পাকিস্তান
সেনাবাহিনী এ তথ্য জানার পর ২৭ মে ভোর
রাতে এসব গ্রাম ঘেরাও করে। নির্বিচারে
গুলি চালিয়ে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের
নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে। পরে
বাগবাটি গ্রামেই গর্ত করে মাটি চাপা
দেয়া হয় তাদের। এ গণহত্যার স্মৃতি
সংরক্ষণে মাত্র দুই বছর আগে একটি ছোট্ট
নামফলক স্থাপন করা হয়েছে। আর কোনো
উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে নিশ্চিহ্ন হতে
বসেছে হাজারো মানুষের স্মৃতিবিজড়ির
স্থান। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদেরও পুনর্বাসন
করা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী যমুনা রানী দত্ত (৮০) বলেন,
সেদিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভোরে
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের গ্রাম
ঘিরে ফেলে। চারদিক থেকে গুলি চালিয়ে
গণহত্যা করে। আমার স্বামী হরিপদ দত্ত,
শ্বশুর কালীপদ দত্ত, দেবর শ্যামাপদ দত্ত
গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। অথচ সরকারিভাবে
তাদের জন্য কিছুই করা হয়নি। গণহত্যার
শিকার স্বজনদের পুনর্বাসনের দাবি জানান
তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী সোহরাব আলী
বলেন, সেদিনের ভয়াবহ ঘটনার কথা মনে
পড়লে আজো গা শিউরে ওঠে। ভোরে গ্রাম
ঘিরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ২০০
মানুষকে হত্যা করে। তাদের মাটি চাপা
দেয়া হয়। আমরা এসব গণকবর ও বধ্যভূমি
সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছি। শহীদ
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিহতদের শহীদ
স্বীকৃতিসহ তাদের অসচ্ছল পরিবারকে
পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল
হোসেন জানান, বাগবাটিসহ জেলার
গণকবরগুলো সংরক্ষণসহ তার ইতিহাস নতুন
প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য পদক্ষেপ
নেয়া হয়েছে। এদিকে বাগবাটি গণহত্যা
দিবস উপলক্ষে আজ স্থানীয় প্রশাসন ও
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যৌথ উদ্যোগে
বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়
প্রাঙ্গণে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছেl

0 comments:

Post a Comment